কেন্দ্রে এসেছেন ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কার মধ্যেও ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোটের হার ৪০ শতাংশের মতো জানিয়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের আশা সব আসনের পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়ার পর তা আরও বাড়তে পারে। গতকাল রোববার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট শেষে ঢাকার নির্বাচন ভবনে প্রেস ব্রিফিং করেন তিনি। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ভোটের ফলাফল আসুক। জনগণ কী বলে, গণমাধ্যমে কী উঠে আসে, তাহলে বলতে পারব গ্রহণযোগ্য হয়েছে কিনা। তিনি বলেন, সরকারের সহযোগিতা পেয়েছিলাম বলে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সহজ হয়েছে।

ভোটের পরিবেশ ও ভোটের হার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সকালে বেশ কিছু কেন্দ্রে আমি ও নির্বাচন কমিশনাররা গিয়েছি। অবস্থা শান্তিপূর্ণ ছিল। আমরা ভোটকেন্দ্র মনিটরিং করেছি। গুরুতর কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।

সাড়ে ৫টার দিকে বিফ্রিংকালে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সারা দেশে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে। পরিপূর্ণ তথ্য এখনও আসেনি। আসার পর আরও বাড়তে পারে, আবার নাও বাড়তে পারে। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।

কিছু কেন্দ্রের ব্যালট দখল করে জাল ভোট ও সিল মারা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, ব্যালটে সিল মেরেছে। কিন্তু পেছনে সই নেই সেগুলো। ওগুলো গণনার সময় বাদ দিয়ে দেওয়া হবে।

নির্বাচন পরিচালনায় কমিশন চেষ্টার ত্রুটি করেনি জানিয়ে সিইসি বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি যতটা অবাধ নির্বাচন করা যায়। কারণ পুরো দেশটা চষে বেড়িয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রশাসনের সাথে কাজ করেছে। আমরাও প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছি। তারাও জানিয়েছেন, তারা পক্ষপাতিত্ব দেখছে না। দৃশ্যমানতার মাধ্যমে স্বচ্ছতা ফুটিয়ে তোলা গেলে বিশ্বাসযোগ্যতা আসবে। অ্যাকচুয়ালি যে ভয়টা ছিল, সহিংসতায় কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। আহত হতে পারে। আমাদের কাছে কোনো সংবাদ আসেনি। টিভি মনিটরিং করে যেখানে ঝামেলা হয়েছে, সেখানে যোগাযোগ করা হয়েছে। ক্রস চেক করে নিশ্চিত হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ থাকেই। সরকারের আন্তরিকতা ছিল। সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতা পেয়েছি বলেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে।

বড় ধরনের গণ্ডগোলবিহীন নির্বাচন এবং অনিয়মের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তুলে ধরে ভোট শেষে স্বস্তিও প্রকাশ করেন সিইসি হাবিবুল আউয়াল। তবে ভোট চলাকালে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার টেঙ্গর শাহী মসজিদ তিন রাস্তার মোড়ে একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন নৌকা প্রতীকের এক সমর্থক। এছাড়া চট্টগ্রামসহ আরও কিছু স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

সংঘর্ষ ও মারামারির বিষয়ে সিইসি বলেন, সহিংসতার গুরুতর কোনো ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনী অনিয়মের বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি জানান, নির্বাচন শেষে একটি বিষয় স্বস্তিদায়ক যে, নির্বাচনী সহিংসতায় কোনো মৃত্যু হয়নি। কিছু কিছু ছোট ছোট ঘটনা ঘটেছে। তবে কিছু কিছু সংবাদ আসছিল কারচুপি, সিল মারা হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে অবহিত হওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিছু ফলস নিউজ এসেছিল, ক্রস চেক করা হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনের যে শঙ্কা ছিল, ভোটার উপস্থিতি হয়তো আরও কম হবে, কারণ একটি বড় দল ভোট বর্জন করে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে, তা হয়নি। অনেক কেন্দ্রে আগুন দেওয়া হয়েছে। তবুও ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগে স্বাধীনভাবে চেষ্টা করেছেন।

Share Now
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930