চেনে তাঁকে সারা পৃথিবী । অথচ বিগত দু’মাস ধরে কোনও খোঁজ মিলছে না চীনের বিশিষ্ট শিল্পপতি তথা আলিবাবা ও অ্যান্ট গ্রুপের মালিক জ্যাক মা’র। কোথায় গেলেন জ্যাক? অনেকেরই আশঙ্কা, চীনের জিনপিং সরকারের সমালোচনা করাতেই রাষ্ট্রের কোপে পড়েছেন তিনি। তারপর থেকেই প্রকাশ্যে তাঁর দেখা মিলছে না। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবর অনুসারে জ্যাকের খোঁজ না মিললেও তাঁর সংস্থাগুলো বহাল তবিয়তেই চলছে। শিল্পপতি হলেও গোটা বিশ্বজুড়েই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে ডাক পড়ে জ্যাক মায়ের। তার অনুপ্রেরণামূলক বক্তৃতার জনপ্রিয়তা রয়েছে সর্বস্তরে। আর সেই বক্তৃতা দিতে গিয়েই গত বছর সাংহাইতে একটি অনুষ্ঠানে সুদখোর আর্থিক নিয়ন্ত্রক পাবলিক সেক্টরের ব্যাংকগুলোর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।
শুধু তাই নয়, বিশ্ব ব্যাংকের বিভিন্ন নিয়মকে বয়স্কদের ক্লাব বলে কটাক্ষও করেছিলেন তিনি। তবে, শুধু সমালোচনাতেই থেমে থাকেননি তিনি। বরং সরকারের কাছে আবেদনও করেন যাতে এই ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হয়। কিন্তু তার এই সমালোচনাকে ভালোভাবে নেয়নি চীনের সরকার। এই বক্তৃতার পরেই রাষ্ট্রের রোষ এসে পড়ে তার উপর। অভিযোগ, জ্যাক মা-র সমালোচনাকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়ে বলে মনে করতে থাকে। এরপরই জ্যাকের বিভিন্ন ব্যবসায় শুরু হয় রাষ্ট্রের তদন্ত। গত বছর নভেম্বরে জ্যাকের অ্যান্ট গ্রুপের ৩৭ বিলিয়ন ডলারের আইপিও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে চীন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জ্যাক মা-র অ্যান্ট গ্রুপের আইপিও নিষিদ্ধ করার আদেশ আসে সরাসরি চীনা প্রেসিডেন্ট জিনপিংয়ের তরফ থেকে। ক্রিসমাসের আগেই সরকারের তরফে জানানো হয়, আলিবাবার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশের বাইরে পা রাখতে পারবেন না জ্যাক মা। তার পর থেকেই ‘নিখোঁজ’ তিনি। এমনকি, নিজের জনপ্রিয় শো’তেও বিচারকের আসনে বসছেন না তিনি। এরপর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম প্রশ্ন তুলছে, তবে কি জিনপিং সরকার গৃহবন্দি করেছে জ্যাক মা’কে? চীনের এক সংবাদমাধ্যমও জানিয়েছে, শেষ দু’মাস জ্যাক দেশের কোনও অনুষ্ঠানে অংশ নেননি। এমনকি সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে তার যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার কথা শোনা গেলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়ে যায়। চীনের বহু অনুষ্ঠানের পোস্টার থেকেও ছবি সরিয়ে নেয়া হয়েছে জ্যাকের। কোথায় গেলেন তিনি? সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে গোটা বিশ্বের শিল্প মহল।