প্রচণ্ড রক্ষণশীল গাজা উপত্যকায় বিপ্লব সৃষ্টি করেছেন নায়লা আবু জুব্বাহ ফিলিস্তিনে প্রথম নারী ট্যাক্সি চালক হয়ে । যদিও ফিলিস্তিনে নারীরা পুরুষদের মতো সমান অধিকার পেয়ে থাকেন। কিন্তু যানবাহন পরিচালনায় এ অধিকারটি শুধুই পুরুষরা ভোগ করে থাকেন দীর্ঘ দিন থেকে।
নায়লা বললেন, আমি আমার এক বন্ধু যিনি হেয়ার ড্রেসারের কাজ করে থাকেন, তাকে জানালাম আমি যদি নারীদের জন্য একটি ট্যাক্সি সার্ভিস পরিচালনা শুরু করি কেমন হয়। সে অবাক হয়ে আমাকে বলেছিল এটি উদ্ভট একটি ধারনা। নায়লার বয়স এখন ৩৯। তিনি বেকার। ইসরায়েল অধিকৃত এ অঞ্চলে ৫০ ভাগ মানুষ বেকার। কোভিডের আগে থেকেই এ ধরনের বিপর্যয় শুরু হয়। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন গাড়ি চালনাকে পেশ হিসাবে বেছে নেবেন।
এক কাপ ধুমায়িত চায়ের কাপে আয়েশ করে চুমুক টানলেন তিনি। সোস্যাল ওয়ার্ক্ ডিগ্রি ধারী নায়লা মাথার ওপর হেজাবটি টেনে নিলেন। তারপর বাইরে পার্ক করে রাখা গাড়ির দিকে এগিয়ে গেলেন। তার স্মার্টফোনটি কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে ভরে নিলেন। ড্রাইভিং সিটে বসে ইঞ্জিনে স্টার্ট্ দিলেন।
এরপর বেরিয়ে এলেন গাজার রাজপথে। তিনি ভাড়ার খোঁজ করেন না। শুধু যারা অগ্রিম বুকিং দিয়ে তাকে বুক করেন তাদের ভাড়াগুলোই তিনি টানেন। এটি অনেকটা রিজার্ভ ভাড়ার মতোই। ধরুন নতুন কনেকে পার্লারে নিয়ে যেতে হচ্ছে, তার ডাক পড়ে।
গাড়িটি ছিল নায়লার বাবার। তিনি মারা যাবার পর এ গাড়িটি তার দখলে চলে আসে। নায়লা বলেন, আমি বলতাম আমি একদিন এ গাড়ির ফায়দা উঠাবো। এ গাড়িটিকে আমি কাজে লাগাবো। এখন নারীদের জন্য আলাদা এ প্রকল্প দেখে নিজেরই ভালো লাগছে। ভাবতে ভালো লাগছে নারীরা নিজেদের জন্য এ প্রকল্পের অংশীদার হবেন।
নায়লা এখন গাজার মূল সড়ক ধরে তার ক্লায়েন্ট ২৭ বছর বয়সী আয়ি সালেমকে নিয়ে যাচ্ছেন শপিংয়ে। আয়ি সালেম চমৎকার একটি বোরকা পড়ে আছেন. হাতে স্টাইলিশ ব্যাগ, মুখে ধুসর নীল মাস্ক, মাথায় হেজাব। তিনি বলেন , আমরা রক্ষণশীল সমাজে বাস করি। যখন আমি দেখি নারীদের জন্য পৃথক টেক্সি প্রকল্প। তখন ভাল লাগে।