রাজ্যেটির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে নিয়েছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি প্রতিবেশী চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরটির দখল নেওয়ারও দাবি করেছে এএ।

রোববার (১৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এএ জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৫টিতেই নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।

মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সীমান্তসংলগ্ন রাখাইন রাজ্য ও চিন রাজ্যের পালেতওয়ার ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করে। এমনকি, জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে ১৪২টি সেনাঘাঁটি দখল করে নিয়েছে বলে দাবি তাদের।

গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি জানায়, তারা গত ৪৫ দিন ধরে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে টানা যুদ্ধ করে যাচ্ছিল। শেষমেশ তাদের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ে থেকে পিছু হটে জান্তা। পরে রাজ্যটির আরও ১৫টি শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় আরাকান আর্মি। পাশাপাশি পালেতওয়া শহরের ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের দখল নেয় তারা।

তবে রাখাইনের বেশির ভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিলেও ম্রউক উ, পাকতাও ও মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে তুমুল লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি। গত বুধবার ম্রউক উ শহরের কোয়ে থাউং প্যাগোডার কাছাকাছি আরাকান আর্মির সঙ্গে জান্তা বাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে আরাকান আর্মির ওপর বিমান হামলা শুরু করে জান্তা বাহিনী।

চলতি সপ্তাহে মংডু ও পাকতাওয়ে শহরে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এর বাইরে পালেতওয়ায় জান্তা বাহিনীর প্রধান ঘাঁটিতেও হামলা অব্যাহত রেখেছে আরাকান আর্মি। এমনকি, পালেতওয়ার ত্রাউনাইং ও নোনে বু দুর্গ থেকে জান্তা বাহিনীকে তাড়িয়ে দিয়েছে তারা।

ইরাবতী বলছে, জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে শুধু রাখাইনেই নয়, জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো মিয়ানমারজুড়েই বেশ সাফল্য লাভ করছে। শান প্রদেশের একটি বাণিজ্য কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে জাতিগত সংখ্যালঘু যোদ্ধারা। কয়েক দিন আগে চীন অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করার আশ্বাস দেওয়ার পর গত শনিবার এ ঘোষণা দেয় সংখ্যালঘু যোদ্ধারা।

মিয়ানমার আরাকান আর্মি (এএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং তাআং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) গঠিত জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ গত অক্টোবরের শেষদিকে যৌথ আক্রমণ শুরু করে। তারপর থেকে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য শানে সংঘর্ষ শুরু হয়।

থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স বলছে, তারা চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবস্থান ও সীমান্ত কেন্দ্রগুলো দখল ফেলেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকে এটাই জান্তা বাহিনীর জন্য সবচেয়ে বড় সামরিক চ্যালেঞ্জ।

Share Now
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930