উন্নত দেশে পাড়ি জমায় মানুষ,নিশ্চিত জীবন, জীবিকার তাগিদ কিংবা উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনে। কিন্তু এর বাইরেও যুদ্ধ-সহিংসতা, হুমকি, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণেও অনেকের কাছে জীবন বাঁচানোর উপায় বিদেশযাত্রা। নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে বাঁচার মানবিক যুক্তি দিয়ে, ভিনদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় বা অ্যাসাইলাম নেন সংঘাতকবলিত দেশের মানুষ।

তবে, এবার দেখা গেল ইউরোপের দেশগুলোয় রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন রেকর্ড সংখ্যক বাংলাদেশি। মানবিক কারণ দেখিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১১১ জন বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে আবেদন জানাচ্ছেন ইউরোপের দেশগুলোতে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাৎসরিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ৪০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির আবেদন জমা পড়েছে। সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ইতালি আর ফ্রান্সে। অবাক করা বিষয়, আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে রোমানিয়াও।

যুদ্ধ-সংঘাত না থাকলেও প্রতি বছরই ইউরোপের দেশগুলোয় বাড়ছে বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা। সিরিয়া-আফগানিস্তানের মতো দেশগুলোর সাথে, এখন আশ্রয়প্রার্থীদের তালিকায় ওপরের দিকে অবস্থান বাংলাদেশের। ইউরোপের রাজনৈতিক আশ্রয় বিষয়ক সংস্থা EUAA বলছে, তালিকার শুরুতেই রয়েছে সিরিয়া। বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ।

দেশের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে ২০২৩ সালে ইউরোপের দেশগুলোতে আবেদন করেছেন ৪০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি। ২০১৫ সালের তুলনায় যা দ্বিগুনেরও বেশি। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১১১ জন বাংলাদেশি এই আবেদন করেছেন। মাঝে কয়েক বছর এই সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পেলেও ২০২১ সালের পর থেকেই বাড়ছে।

রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশিদের প্রথম পছন্দ ইতালি। গেল বছর দেশটিতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন ২৩ হাজারের বেশি বাংলাদেশি। এরপরই রয়েছে ফ্রান্স।

অবাক করা বিষয় হলো, এবার অনেক বাংলাদেশিই আবেদন করেছেন রোমানিয়ায়। ২০২৩ সালে এ দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন পড়েছে সবমিলিয়ে ১০ হাজার ১৩২টি। এর মধ্যে বড় একটি অংশই বাংলাদেশিদের। এমনকি স্লোভানিয়া আর মাল্টার মতো দেশেও সর্বোচ্চ আবেদনের তালিকার দ্বিতীয়তে রয়েছে বাংলাদেশিরা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বজুড়ে সংঘাত বৃদ্ধি পাবার কারণে বেড়েছে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনের হার। অবশ্য, রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে যত আবেদন পড়ছে, নাকচ করা হচ্ছে তার বেশিরভাগই।

Share Now
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930