দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে ডিভিশন না দেয়া এবং ‘অখাদ্য’ খাবার দেয়ার অভিযোগ এনেছেন তার আইনজীবীরা।
কারাগারে যাওয়ার দুই দিন পর শনিবার বিকালে বিএনপি নেত্রীর পাঁচ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তার সঙ্গে দেখা করে এসে এই অভিযোগ করেন।
বৃহস্পতিবার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ হওয়ার পর পর খালেদা জিয়াকে নেয়া হয় পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে।
খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার সামাজিক মর্যাদা বিবেচনা করেই সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরা্ষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজাজ্জামান খাঁন কামাল।
আর আদালতের আদেশে খালেদা জিয়ার ৩৫ বছরের গৃহকর্মী ফাতেমাকেও কারাগারে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেয়া হয়।
শুক্রবার খালেদা জিয়ার বন্দী জীবনের দ্বিতীয় দিন তার পছন্দের ফল দিতে গিয়ে ব্যর্থ হন বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতার স্ত্রী।
পরদিন বিকালে বিচারিক আদালতের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের বিষয়ে পরামর্শ করতে খালেদা জিয়ার পাঁচ আইনজীবী মওদুদ আহমদ, সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকার, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার প্রধান আইনজীবী আবদুর রেজ্জাক খান যান কারাগারে। তারা বিকাল চারটা ২৫ মিনিটে কারাগারে ঢুকেন, বের হন ৫টা ৪৫ মিনিটে।
মওদুদ আহমদ এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্জন কারাবাস বলতে যা বোঝায়, ম্যাডামকে তা দেয়া হয়েছে। জনমানবহীন পরিবেশে রাখা হয়েছে। ডিভিশন দেয়া হয়নি। সাধারণ কয়েদিদের যা খেতে দেয়া হয়, খালেদাকেও তাই দেয়া হয়েছে, যা প্রায় অখাদ্য।’
‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে, একটি দলের প্রধান হিসেবে তার ডিভিশন পাওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হচ্ছে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘যে পরিচারিকাকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে রাখার কথা বলা হয়েছে, যাকে ছাড়া ম্যাডাম ১৫-২০ বছর চলতে পারেননি, সেই ফাতেমাকেও এখনো থাকার অনুমতি দেয়া হয়নি। এটা সরকারেরই দেখা দরকার।’ এ বিষয়ে প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করবেন বলে জানান মওদুদ।
কারাদণ্ডের আদেশ হওয়ার পরও খালেদা জিয়ার মনোবল অটুট আছে জানিয়ে মওদুদ বলেন, রায়ের অনুলিপি পেলে সোমবার বা মঙ্গলবার হাই কোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তারা।
এর আগে বিকাল পৌনে তিনটার দিকে পুরান ঢাকায় সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকে গিয়ে সামনের চেকপোস্টে থাকা পুলিশ সদস্যদের কাছে আবেদনপত্রটি দেন আইনজীবীরা। পরে তা কারা কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয় বলে জানান সেখানে দায়িত্বরত লালবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খন্দকার হেলাল উদ্দিন।
পরিদর্শক আরও বলেন, কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি দেয়ার পর আইনজীবীদের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
