ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পাঁচটি হলে আসন বণ্টন-সম্পর্কিত নীতিমালার একটি ধারায় বলা হয়েছে অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীরা হলে থাকতে পারবেন না , আর বিবাহিতরা অনুমতি সাপেক্ষে শুধু চলিত সেশনে থাকতে পারবেন। আর এগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হলগুলোর ছাত্রীরা। এ নিয়ম বাতিলে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করলে তিনি শিক্ষার্থীদের জানান, কিছু লোকের হঠকারী চিন্তায় কিছু করা যাবে না। হল কর্তৃপক্ষ ও ডিনস কমিটির সভায় আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কোনো পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত এ নিয়মই অব্যাহত থাকবে।

ছাত্রীদের অন্য তিন দাবি হলো- শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মর্যাদা রক্ষায় সব ছাত্রী হলে ‘লোকাল গার্ডিয়ান’ বা ‘স্থানীয় অভিভাবকের’ পরিবর্তে ‘ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট’ বা ‘জরুরি যোগাযোগ’ শব্দটি রাখা, আবাসিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারা যেকোনো ধরনের হয়রানি এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা সাপেক্ষে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের অধিকার পুনর্বহাল করা ও জরুরি প্রয়োজনে তাদের হলে অবস্থান করতে দেওয়া।

বিবাহিত হওয়ায় সম্প্রতি শামসুন নাহার হল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের দুই ছাত্রীর সিট নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। সেই প্রেক্ষাপটে ছাত্রীরা বিবাহিত ছাত্রীদের ক্ষেত্রে থাকা নিয়মটি বাতিলের আবেদন নিয়ে উপাচার্যের কাছে যান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য ১৩টি হলে সিট বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের বড় অংশই বছরের পর বছর হলগুলোতে থাকেন। ফলে সিট সংকটের কারণে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের থাকতে হয় ‘গণরুমে’। পাশাপাশি তাদের ‘গেস্টরুমের’ বিভীষিকা পোহাতে হয়। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের কর্মসূচিতে না গেলে নবীন শিক্ষার্থীদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন।

ছাত্রী হলগুলোতে এ চিত্র কিছুটা ভিন্ন। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পর ছাত্রীদের বড় অংশই হলের সিট ছেড়ে দেন। ফলে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া ছাত্রীরা কয়েক মাসের মধ্যেই হলে বৈধ সিট পেয়ে যান। তবে অভিযোগ আছে, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নেত্রীরা ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও বছরের পর বছর হলে থাকেন। সাধারণ ছাত্রীদের ক্ষেত্রে নিয়মের কড়াকড়ি থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নেত্রীদের ব্যাপারে হল প্রশাসনগুলো নির্বিকার।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031