একটি বালিকা বাংলাদেশের মাত্র ১৭ বছর বয়সী । নাম সোনালি (ছদ্মনাম)। তাকে পাচার করে ভারতে নিয়ে তিনবার বিক্রি করা হয়েছে। তিনবারই তাকে ব্যবহার করা হয়েছে পতিতাবৃত্তিতে। অবশেষে পুলিশ তাকে উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদের রাচাকোন্দা পুলিশ ও প্রাজওয়ালা এনজিও তাকে উদ্ধার করেছে। ওই এনজিওর সুনীতা কৃষ্ণান পুলিশকে তথ্য জানানোর ১০ দিনের মাথায় আন্তর্জাতিক যৌনতার একটি চক্রকে আটক করে তারা।
ভয়াবহ এই ঘটনার সূত্রপাত হয়, যখন সিকদার নামে এক ব্যক্তি ভালবাসার প্রলোভনে সোনালিকে প্রলুব্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তাকে নিয়ে যায় ব্যাঙ্গালোরে। সেখানে পৌঁছানোর পর ভালবাসা তো দূরের কথা সোনালির জীবনে নেমে আসে এক ভয়াবহতা। তাকে বাধ্য করা হয় পতিতাবৃত্তিতে। এক পর্যায়ে তাকে বাধ্য করা হয় নাচতে। ততক্ষণে তাকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বিজওয়াদার বিজয়া নামে এক নারীর কাছে। ওই নারী তাকে পতিতা হিসেবে ব্যবহার করতে থাকে। তাকে এ কাজে ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করতে থাকে। এ সময় বিজয়ার ছেলে ও তার বন্ধুরা পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করতে থাকে সোনালিকে। এখানেই শেষ হয়ে যায় না সোনালির জীবনের অন্ধকার দিন। তাকে এবার হায়দরাবাদে এক বাংলাদেশী দম্পতির কাছে বিক্রি করে দেয় বিজয়া। বাংলাদেশী ওই দম্পতি চার বছর আগে হায়দরাবাদে বসতি গেড়েছে। এই দম্পতির একজন বৃষ্টি হোসেন। তিনি একজন বিউটিশিয়ান। তার স্বামী মোহাম্মদ সোহেল হোসেন রাজমিস্ত্রি। তারা চার বছর আগে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে। সেখানে হায়দরাবাদের হাফিজপেটে বসতি স্থাপন করে। এক পর্যায়ে বিজয়ার সঙ্গে তাদের জানাশোনা হয়। সোনালিকে তারা কিনে নিয়ে যায় নিজেদের কাছে। দেশী মানুষ ভেবে সোনালি ভেবেছিল, তাদের কাছে তার জীবন নিরাপদ থাকবে। কিন্তু হায়! সেখানেও সেই নারকীয়তা। তারাও তাকে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করে। এক এক সময় বিভিন্ন বাসায় নিয়ে যায় পতিতাবৃত্তিতে। বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্যবহার করে তারা খদ্দের ধরতে থাকে।
একদিন সোনালিকে যখন পতিতাবৃত্তিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন রাচাকোন্দা পুলিশ ওই দম্পতিকে ধরে ফেলে। এ সময় তাদের সঙ্গে কোনসু হরি চৌধুরী নামে একজন খদ্দের ছিল। তাদের হাত থেকে পুলিশ সোনালিকে উদ্ধার করে। তাকে পাঠিয়ে দেয় পরিচর্যা বিষয়ক কেন্দ্রে। অন্যদিকে গ্রেপ্তার করা হয় ওই দম্পতি ও খদ্দেরকে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031