আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, ‘ভাত জোটে না’ লেখায় প্রথম আলোর সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন। এই ধরনের অপপ্রচার চালানোও অপরাধ, এ জন্যও মামলাও হতে পারে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।

রবিবার (২ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশ ও দেশের বাইরে থেকে কেউ কেউ বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি দেখতে পায় না বরং এটিকে নিয়ে কটাক্ষ করে। দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত ঘটনা হলো আমাদের উন্নয়ন অগ্রগতিকে আড়াল করা হয়। কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমে দেখতে পাই, কোনো একটি নেতিবাচক সংবাদ হলে সেটিকে যেভাবে ফলাও করে প্রচার করা হয়, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির প্রশংসা কিংবা বিভিন্ন সূচকে যখন আমরা এগিয়ে যাই, সেটি সেভাবে প্রচার করা হয় না। যেটি সমীচীন নয়।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘অনেক সময় খারাপ সংবাদকে গুরুত্ব দিয়ে ছাপানো হয়। ভালো সংবাদকে পরিবেশন করা হয় না। ২৬ মার্চ আমাদের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। সেই দিন মহান জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনে একটি শিশুর হাতে দশ টাকা দিয়ে যেই ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তাকে দিয়ে যে বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, সে সেই বক্তব্য দেয়নি।’

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘একজন দিনমজুরের বক্তব্য দিয়ে ছাপানো হয়েছে, ‘স্বাধীনতা দিয়ে কী হবে, যদি খাইতে না পারি’। এভাবে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। একই সাথে একটি শিশুর ছবি ব্যবহার করে তাকে নিগ্রহ করা হয়েছে। দিনমজুরের বক্তব্য, ছবি শিশুর। তারা অনলাইনে সেটি প্রকাশও করেছে।’

তিনি বলেন, ‘তারা (প্রথম আলো) এখন পর্যন্ত ক্ষমা চায়নি। ভুল স্বীকার করে পত্রিকায় কোনো বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। বরং সংশ্লিষ্ট মিডিয়া হাউজ থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকদের টেলিফোন করা হয়েছে, দেন দরবার করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ে লেখার কারণে এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ে সব টেলিভিশনে প্রতিবেদন হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমগুলোতে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়া নিয়ে রিপোর্ট হচ্ছে। এ জন্য তো কোনো মামলা হয়নি? দ্রব্যমূল্য বাড়লে কিংবা কমলে রিপোর্ট হবে, খুবই স্বাভাবিক। জনগণের কষ্ট হলেও খবরে আসবে। সে জন্য কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

জাতিসংঘের শিশু সনদ লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘প্রশ্ন উঠেছে, গ্রেফতার কেন রাত্রে করা হয়েছে? মামলা হওয়ার পর গ্রেফতার হয়েছে। রাত ৪টায় অনেক সংসদ সদস্যকেও গ্রেফতার করা হয়। দেশের কয়েক দফা মন্ত্রী ছিলেন, বড় রাজনীতিবিদ, তাদেরও রাতে গ্রেফতার করা হয়। তখন তো কোনো প্রশ্ন আসেনি? সবাইকে রাত্রে গ্রেফতার করা যাবে, আবার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না, এমন কোনো আইন নেই। দেখতে হবে, কোনো নির্যাতন করা হয়েছে কি না। নির্যাতনের কোনো অভিযোগ আসেনি।’

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আজ দেশের সব মানুষ এ ব্যাপারে মুখ খুলেছে, প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পত্রিকা ক্ষমা চায়নি বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটির জন্য কেউ মামলা করে কি না সেটিই দেখার বিষয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031