দুদক ঘুষ লেনদেনের মামলায় পুলিশের সাময়িক বরখাস্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক (সাময়িক বরখাস্ত) খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে । তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।

রবিবার দুদকের এক সভায় এই অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয় বলে ঢাকা টাইমসকে নিশ্চিত করেন সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগের এক কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে  দুদকের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘অবৈধভাবে সুযোগ প্রদানের উদ্দেশ্যে এনামুল বাছির ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা যে ঘুষ গ্রহণ করেছেন তা প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়ার কারণেই দুদক তাদের বিরুদ্ধে  অভিযোগপত্র অনুমোদন করে।’

মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা জানিয়েছেন, শিগগিরই তাদের দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।

আগামী ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই মামলার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় ঠিক করে রেখেছে আদালত। ৪০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে গত ১৬ জুলাই ফানাফিল্যা মানিলন্ডারিং আইনে সংস্থার ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায় থেকে বাঁচার জন্য ডিআইজি মিজানুর অসৎ উদ্দেশ্যে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে খন্দকার এনামুল বাছিরকে প্রভাবিত করেন বলে অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়েছে।

জোর করে এক নারীকে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় গত বছরের জানুয়ারিতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মিজানকে। এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক। সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির।

অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান গত বছরের ৮ জুন দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা বাছির। এর সপক্ষে তাদের কথপোকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপ একটি টেলিভিশনকে দেন তিনি। ওই অডিও প্রচার হওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা।

অভিযোগটি অস্বীকার করে বাছির দাবি করেন, তার কণ্ঠ নকল করে ডিআইজি মিজান কিছু ‘বানোয়াট’ রেকর্ড গণমাধ্যমে সরবরাহ করেছেন। অন্যদিকে ডিআইজি মিজান বলেন, সব জেনেশুনেই তিনি কাজটি করেছেন বাধ্য হয়ে। ঘুষের অভিযোগ ওঠার পর তাদের দুজনকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

গত বছর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে। অপরদিকে আরেক মামলায় গ্রেপ্তার ডিআইজি মিজানকে পরে এই মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সে সময় এনটিএমসির প্রতিবেদন পাওয়ার পর ৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে বাছিরের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031