স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ও টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান উসমান খাজার অনবদ্য ব্যাটিংয়ে সিডনিতে অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টে প্রথম ইনিংসে বড় স্কোরের আভাস দিচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্মিথ আজ টেস্টে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি টেস্টে ৬ হাজার রানের কোটা পূরণ করেছেন। ক্যারিয়ারে ১১১তম ইনিংসে স্মিথ এই মাইলফলক স্পর্শ করেন। তার আগে এই তালিকায় শীর্ষে আছেন কিংবদন্তী আরেক অস্ট্রেলিয়ান স্যার ডন ব্র্যাডম্যান।

পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজে ইতোমধ্যেই স্মিথ তিনটি সেঞ্চুরি করেছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বরাবরই ব্যাট হাতে উজ্জ্বল স্মিথ শেষ টেস্টে আরেকটি সেঞ্চুরিরই ইঙ্গিত দিচ্ছেন। দ্বিতীয় দিনের প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের করা ৩৪৬ রানের জবাবে দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ান সংগ্রহ দুই উইকেটে ১৯৩। স্মিথ ৪৪ ও খাজা সিরিজের সর্বোচ্চ রানসহ ৯১ রানে অপরাজিত আছেন।

স্মিথ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ান পেসার প্যাট কামিন্স বলেছেন, ‘আমরা সৌভাগ্যবান যে স্মিথ আমাদের দলেরই খেলোয়াড়, যে কারণে তার বিপক্ষে আমাদের বোলিং করতে হয় না। যে সব বড় ইনিংস সে দলের হয়ে খেলেছে তা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিসবেন ও পার্থে সেগুলো ছিল ম্যাচ জয়ী ইনিংস আর মেলবোর্নে ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস। এটা অবিশ্বাস্য। আমি মনে করি দুই দলের মধ্যেই স্মিথই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।’

উদ্বোধনী জুটি ক্যামেরুন ব্যানক্রফট (০) ও ডেভিড ওয়ার্নারকে (৫৬) হারানোর পরে স্মিথ-খাজা জুটি তৃতীয় উইকেটে ১০৭ রানে অপরাজিত পার্টনারশীপ গড়ে তুলেন। মঈন আলীর বলে ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে খাজা সিরিজের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি সংগ্রহ করেন। খাজা সর্ম্পকে কামিন্স বলেছেন, যখন সে দিনশেষে ক্রিজে ফিরে আসায় সবাই অনেক অভিনন্দন জানিয়েছে, তার জন্য আমরা সবাই খুব খুশী। সে যে একজন বিগ হিটার সে সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। তবে এই সিরিজে সে সময়ের অপেক্ষায় ছিল।

গত ৯০ বছরে সবচেয়ে কম বয়সী বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে ইংল্যান্ড দলে সুযোগ পাওয়া ম্যাসন ক্রেন তার স্পিন ঘূর্ণি দিয়ে স্মিথ ও খাজাকে বেশ সমস্যায় ফেলেছিলেন। দিনশেষে ২০ বছর বয়সী এই অভিষিক্ত স্পিনার ১৭ ওভাওে ৫৮ রান দিয়ে অবশ্য কোন উইকেট শিকার করতে পারেননি। উইকেট না পেলেও ইতোমধ্যেই সকলের নজড়ে পড়েছেন ক্রেন। ম্যাচ শেষে নিজের প্রতিক্রিয়ায় ক্রেন বলেছেন, ‘এটা সত্যিই অসাধারণ এক অনুভূতি। যদিও আমি কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। তারপরেও আমি পুরোটা সময় বেশ উপভোগ করেছি। কাল পর্যন্ত আর অপেক্ষা করতে পারছি না। আশা করছি কালও নিজেকে প্রমাণ করতে পারবো।’

৫৬ রানে এন্ডারসনের বলে উইকেটে পিছনে বেয়ারস্টোর হাতে ক্যাচ তুলে দেবার আগে ওয়ার্নার সিরিজের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন। তার আগে অবশ্য মাত্র সাত বলে কোন রান না করেই স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন আরেক ওপনার ব্যানক্রফট।

প্রথমদিন ৫ উইকেটে ২৩৩ রানে দিন শেষ করা ইংল্যান্ডে ইনিংস মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই গুটিয়ে যায়। সকালের সেশনে নতুন খেলোয়াড় টম কারানের ৬৫ বলেন ৩৯, মঈন আলী ৩০ ও ব্রডের দুই ছক্কায় ৩২ বলে ৩১ রানের ইনিংসে ইংল্যান্ড দ্রুত স্কোরবোর্ডে রান সংগ্রহ করে। আগেরদিন ৫৫ রানে অপরাজিত থাকা ডেভিড মালান আর মাত্র সাত রান যোগ করে মিশেল স্টার্কের বলে স্মিথের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ডাররা এরপর মাত্র চার বলের ব্যবধানে দুটি ক্যাচ ফেলে দিলে ম্যাচে উত্তেজনা বাড়ে। ন্যাথান লিঁওর বলে মিড-অনে কামিন্স কারানের (২১) ও কামিন্সের পরের ওভারে মিডঅনে মঈন আলীকে (২২) জীবন ফিরিয়ে দেন জোস হ্যাজেলউড। চলতি সিরিজে এই নিয়ে ১১টি ক্যাচ ড্রপ করলো অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ডাররা।

ইতোমধ্যেই সিরিজ নিশ্চিত করা স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস : (আগেরদিন ৫ উইকেটে ২৩৩) ৩৪৬ অল আউট, ১১২.৩ ওভার (জো রুট ৮৩, মালান ৬২, কুক ৩৯, কারান ৩৯: কামিন্স ৪-৮০, হ্যাজেলউড ২-৬৫, স্টার্ক ২-৮০)

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস : ২ উইকেটে ১৯৩, ৬৭ ওভার (খাজা ৯১*, স্মিথ ৪৪*, ওয়ার্নার ৫৬: এন্ডারসন ১-২৫, ব্রড ১-২৮)

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031