অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বিদেশে অর্থপাচারের ক্ষেত্রে নিজেদের দায় রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। আর পাচার রোধে কী কী ব্যবস্থা নেয়া যায় সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার সকালে সিলেট নগরীর নাইওরপুল এলাকায় নবনির্মিত ফোয়ারা উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের হিসাবে বিপুল পরিমাণ টাকা বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে তার কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা।

সুইস ব্যাংকের সবশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশিদের হিসাবে এক হাজার কোটি টাকা বা ১৯ শতাংশেরও বেশি অর্থ জমা হয়েছে সুইস ব্যাংকে। ২০১৬ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ থেকে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ৬৬ কোটি ১০ লাখ সুইস ফ্রাঁ। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় হয় প্রায় পাঁচ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। আগের বছর এই জমার পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৫ কোটি সুইস ফ্রাঁ বা চার হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। এই টাকার একটি বড় অংশ অবৈধভাবে পাচার হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সারা দুনিয়াতে অর্থ পাচার হচ্ছে। তবে এটা রেইট অব গ্রোথ ভেরি করে। আমাদের দেশে বেশি হচ্ছে। এজন্য আমরাই কিছুটা দায়ী।’

পরে নিজেদের দায় কোথায় সেটাও ব্যাখ্যা করেন মুহিত। তিনি বলেন, ‘আমরা ল্যান্ড ভ্যালু খুব কম রেখেছি। একটি বাড়ি থেকে কেউ এক কোটি টাকা পায়, সরকারি হিসেবে সেটা হয় ৩০ লাখ টাকা, বাকিগুলো ব্লাক মানি হয়ে যাওয়ায় বিদেশে পাঠিয়ে দেয়।’

এ সময় বিদেশ থেকে বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠানোর পরিমাণ কমার বিষয়েও কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। গত অর্থবছরে বিদেশ থেকে টাকা আসার পরিমাণ কমেছে ১৪.৪৭ শতাংশ। এই এক বছরে বিদেশ থেকে এসেছে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম রেমিটেন্স এসেছে গত অর্থবছরে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রেমিটেন্স কমার দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত বিদেশে প্রবাসীদের সেটেল হওয়ার হার বাড়ছে, তাই অনেকে দেশে টাকা কম পাঠাচ্ছেন। আর প্রবাসীদের একটা অভিযোগ হচ্ছে টাকা পাঠানো ফি বেশি। এজন্য তবে রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে আগামী মাসের মধ্যে ফি কমানো হতে পারে।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার, সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিব, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031