সাম্প্রতিক সময়ে নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক–সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দিন পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিলেও গতকাল এই দুই নেতা পার্টি অফিসে এক টেবিলে বসে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিলেন। আগামী ২৯ এপ্রিল কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে প্রতিনিধি সভাকে সফল করতে নগর আওয়ামীলীগের দুই শীর্ষনেতা এক সাথে মিটিং করেছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘ভাইয়ে ভাইয়ে অনেক ভুল বোঝাবুঝি হয়, আমরা আমাদের নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে মিটমাট করে ফেলেছি। আমি কিছু কথা বলেছি–এটা কিন্তু রাজনৈতিক সমাবেশ ছিলনা। পরবর্তীতে আমরা শহীদ মিনারে দুইজনে হাত তুলে এক হয়ে গেছি।’
কিন্তু অনেকেই লিখেছে ‘আঁর বেইল গেয়িগই, আঁর বেইল গেইলিগইও আঁই মিটিং–মিছিল–সমাবেশত্ আছি।’ আজকেও এসেছি–আগামী ২৯ এপ্রিলও আসবো, যতদিন বেঁচে থাকবো সংগঠনের কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যাব। অনেকেই অনেক কিছু করতে চেয়েছিল, সাংবাদিকদের দিয়ে লিখাতেও চেয়েছিল। কিন্তু আমরা এক হয়ে গেছি।
নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দিনের পরিচালনায় গতকাল বিকালে দারুল ফজল মার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় মহিউদ্দিন চৌধুরী এসব কথা বলেন।
আগামী ২৯ এপ্রিল দি কিং অব চিটাগাং–এ নগর আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি সভাকে সফল করার লক্ষ্যে গতকাল মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা আহবান করা হয়েছিল।
উলেহ্মখ্য গত ১০ এপ্রিল লালদীঘির ময়দানে সোনালী যান্ত্রিক মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সমাবেশে নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী সুইমিং পুল, সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক–সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দিনের কঠোর সমালোচনা করে বক্তব্য রেখেছিলেন। পরদিন ১১ এপ্রিল জিইসির মোড়স্থ প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আবার সাংবাদিকদের সামনে নানান অভিযোগ উত্থাপন করেন তিনি।
পরবর্তীতে ১৭ এপ্রিল শহীদ মিনারে মুজিব নগর দিবসের আলোচনা সভায় নিজ থেকে নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দিনকে কাছে ডেকে নিয়ে দুইজনের হাত তুলে ঐক্যের ডাক দেন।
আগামী ২৯ এপ্রিল কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে নগর আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি সভাকে সফল করার জন্য নগর আওয়ামীলীগের দুই শীর্ষ নেতা (নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দিন) গতকাল কার্যনিবার্হী কমিটির সভা আহবান করেছিলেন। সভায় নগর আওয়ামীলীগের ৭১ সদস্যের কমিটির মধ্যে ৫১ জন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দিন বলেন, যেহেতেু আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি সভা–আওয়ামীলীগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। প্রতিনিধি সভাকে সফল করার লক্ষ্যে প্রতিদিন বিকালে দলীয় কার্যালয়ে সম্পাদক মন্ডলীর সদস্যদের নিয়ে বসবো। তিনি প্রতিনিধি সভার কার্যবিধি, আলোচন্য বিষয় এবং প্রতিনিধিদের প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক আচরণ বিধির অনুসরণের লক্ষ্যে দলীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি আরো বলেন, প্রতিনিধি সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ, থানা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটি. আহ্বায়ক কমিটি, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়ক এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত দলীয় কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
খোরশেদ আলম সুজন বলেন, প্রতিনিধি সভার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে ঐদিন কে কে বক্তব্য দিবে তা আগে থেকেই ঠিক করতে হবে। তা না হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে।
সভায় ২৯ এপ্রিল প্রতিনিধি সভায় নগর ছাত্রলীগের একজন, শ্রমিক লীগের দুই গ্রুপের দুইজন এবং যুবলীগের একজনকে বক্তব্য দেওয়ার প্রস্তাব করা হলে সাধারন সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি সভায় শুধুমাত্র আওয়ামী লীগই বক্তব্য রাখার পক্ষে মত দিলে তা গৃহীত হয়। গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠান ও এর আশে পাশে কোন ব্যক্তি বিশেষের নামে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার টাঙ্গানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমনকি সভাস্থানে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম এবং সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী গান ছাড়া কোন ব্যক্তি বিশেষের নামে োগান দেয়া যাবে না।
সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট সুনীল সরকার, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, এম জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ্ব বদিউল আলম, এম এ রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সৈয়দ হাসান মাহমুদ চৌধুরী শমসের, শফিকুল ইসলাম ফারুক, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, দেবাশীষ গুহ বুলবুল, আবদুল আহাদ, হাজী জহুর আহমদ, ডা: ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী, দিদারুল আলম চৌধুরী, মানস রক্ষিত, শহিদুল আলম, কার্যনির্বাহী সদস্য এম এ জাফর, হাজী মো: ইয়াকুব, আবুল মনসুর, নুরুল আমিন শান্তি, সৈয়দ আমিনুল হক, পেয়ার মোহাম্মদ, আলহাজ্ব দোস্ত মোহাম্মদ, শেখ শহিদুল আনোয়ার, গাজী শফিউল আজিম, কামরুল হাসান ভুলু, বখতিয়ার উদ্দিন খান, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, নজরুল ইসলাম বাহাদুর, আহমদ ইলিয়াছ, জাফর আলম চৌধুরী, গৌরাঙ্গ চন্দ্র ঘোষ, মহব্বত আলী খান, অমল মিত্র, আবদুল লতিফ টিপু, রোটারিয়ান মো: ইলিয়াছ, মো; জাবেদ, হাজী বেলাল আহমদ, মোরশেদ আক্তার চৌধুরী প্রমুখ।