বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুন গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় । তবে তিনি নিরাপত্তা নিয়ে এখন সতর্ক।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট ‘ডিক্যাব টক’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ইইউ এর রাষ্ট্রদূত।
গত ১ জুলাই হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশিসহ প্রাণ হারায় ২২ জন। সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারীসহ ছয় জন। এই হামলায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে দেশ-বিদেশে উদ্বেগ তৈরি হয়। তবে সরকারও নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং জঙ্গি হামলা মোকাবেলায় নানা উদ্যোগ নেয়।
এরই মধ্যে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতায় নাটের গুরু হিসেবে শনাক্ত তামিম চৌধুরীসহ শীর্ষস্থানীয় বেশ কজন জঙ্গি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন।
গুলশানে জঙ্গি হামলা ও পরবর্তী পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশ সরকারের নেয়া পদক্ষেপসহ বিভিন্ন বিষয় কথা বলেন মায়াদু। বলেন, ‘নিরাপত্তা নিয়ে আমরা এখন ভীত নই, তবে সতর্ক। আগের চেয়ে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা মানে শুধু কূটনৈতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবলে চলবে না; সারা দেশের নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিবেচনায় নিতে হবে। তাই সমন্বিত উপায়ে আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’
পিয়েরে বলেন, ‘আমরা দেখতি পাচ্ছি ইংল্যান্ডের ক্রিকেট টিম বর্তমানে বাংলাদেশ সফর করছে এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সফর করে গেছেন। এখান থেকেই বোঝা যায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে।’
ইইউর রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘১ জুলাইয়ের হামলার পর বিভিন্ন দেশ নিরাপত্তা সহযোগিতা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে কাছে প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও আছে। এগুলো সম্পর্কে আমি বিস্তারিত জানি না। তবে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এ প্রস্তাবগুলো দেওয়া হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ইইউ রাষ্ট্রদূত জানান, আগামী ২০ ডিসেম্বর ব্রাসেলসে যৌথ কমিশনের উপগ্রুপের বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে কথা হবে।
২০১৭ সালের শুরুতে শেষ হচ্ছে রকিব উদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। তার আগেই নতুন কমিশন গঠন করা হবে। ২০১২ সালের রকিব উদ্দীনের নেতৃত্বে কমিশন গঠনের মতোই নতুন কমিশনও সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার কথা।
এক প্রশ্নের জবাবে পিয়েরে বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন নিয়ে ভাবতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ বিষয়ে ইসির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।’
আগামী বছরের শুরুতে যে নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেবে তার অধীনেই হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালের এই ভোট হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রীরা।
এই হিসাবে সরকারের হাতে দুই বছরেরও বেশি সময় বাকি আছে। তবে যে প্রশ্নে গত সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট সেই প্রশ্নের সুরাহা হয়নি এখনও। ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়েরেও নির্বাচন নিয়ে সব অনিশ্চয়তা দূর করতে উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান। বলেন, ‘২০১৯ সাল আসতে দেরি আছে, তবে সেটা অনেক দূর নয়। এখনই এ নিয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।’
