ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ কিংবা ইউরো কাপ; যেকোনো বড় আন্তর্জাতিক আসরে ফেভারিটের তকমা নিয়ে যায় । শুরুটাও করে তেমনই। কিন্তু শেষে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে। যেমন গত বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে গিয়ে হেরে বিদায় নিতে হয়। আর ইউরো কাপের ফাইনাল থেকেও বিদায় নেয় ইংলিশরা।

এবারের বিশ্বকাপেও এসেছে হ্যারি কেইনরা ফেভারিট হয়ে। শুধু তাই নয়, ইংল্যান্ডের এবারের দলটিকে বলা হচ্ছে ৫৬ বছরে সেরা দল। আর শুরুটাও ঠিক সে রকমই। এশিয়ার পরাশক্তি ইরানকে উড়িয়ে দিয়ে ইংলিশরা যেন জানান দিল তারা শিরোপা জিততে এসেছে। বিশ্বকাপে দুই দলের প্রথম সাক্ষাতে ৬-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে ইরান। প্রথমার্ধে তিন গোলে এগিয়ে থাকা ইংলিশরা দ্বিতীয়ার্ধে করেছে আরো তিন গোল।

ইংল্যান্ডের গতি আর টেকনিকের কাছে একেবারে অসহায় ছিল ইরানের রক্ষণ দুর্গ। তার উপর ম্যাচের শুরুতে গোল রক্ষককে হারানোর ধাক্কাটাও ছিল বেশ বড়। বল দখল, গোলে শট, গোল কিংবা কর্নার আদায় করে নেওয়া সবদিক থেকে এগিয়ে ছিল ইংলিশরা।

বাছাই পর্বের দশ ম্যাচের ছয়টিতেই জিতেছিল ইংল্যান্ড। যেখানে সান মারিনোকে এক ম্যাচে হারিয়েছিল ১০-০ গোলের ব্যবধানে। ৫-০ গোলে জিতেছিল তিন ম্যাচ। আর সে ধারা যেন বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে এসেও অব্যাহত রাখল ইংল্যান্ড। উড়ন্ত সূচনায় বিশ্বকাপকে রাঙিয়ে দিল ইংল্যান্ড। খেলার আগেরদিন ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেইন বলেছিলেন, দেশের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ভাল নেই। তাই তাদের মুখে হাসি ফোটাতে বিশ্বকাপে আমাদের ভাল কিছু করতে হবে। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে এমন দাপুটে জয় নিশ্চয়ই দেশের মানুষের জন্য হ্যারি কেইনদের সেরা উপহার।

শক্তি আর সামর্থ্যের ফারাকটা ম্যাচের শুরু থেকেই বুঝিয়ে দিচ্ছিল ইংল্যান্ড। ইরানের সীমানায় বারবার হানা দিয়েছে ইংলিশরা শুরু থেকেই। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে গোল রক্ষককে হারানোর ধাক্কাটা খায় ইরান। ডান দিক থেকে ডি-বঙে দারুণ ক্রস করেছিলেন হ্যারি কেইন। এগিয়ে এসে বিপদমুক্ত করার সময় সতীর্থের সঙ্গে সংঘর্ষে নাক ফেটে যায় ইরানের গোলরক্ষক আলিরেজা বেইরনভান্দের। অনেকটা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

কিন্তু বেশিক্ষণ পারেননি। একটু পরই শুয়ে পড়েন মাঠে। স্ট্রেচারে করে তাকে নেওয়া হয় মাঠের বাইরে। এরপর থেকে বল দখলে একচেটিয়া আধিপত্য করা ইংল্যান্ড অবশ্য পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না। ২৯ মিনিটে প্রথম উল্লেখ করার মত সুযোগটা পেয়েছিল সাউথগেটের দল। ৪৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাকা। প্রথমার্ধে ১৪ মিনিট যোগ করেন রেফারি। আর সে সময়ের প্রথম মিনিটে ব্যবধান ৩-০ গোলে উন্নীত করে ইংল্যান্ডকে চালকের আসনে বসিয়ে দেন স্টার্লিং। ৬২ নিজের দ্বিতীয় এবং দলের পক্ষে চতুর্থ গোল করেন সাকা। চার গোল হজম করে ম্যাচ থেকে যখন প্রায় ছিটকে গেছে ইরান তখন হঠাৎ করেই যেন জ্বলে উঠল এশিয়ার দলটি। ৬৫ মিনিটে ইরানকে সুখকর স্মৃতি এনে দেন মেহদি তারেমি। তবে ইরানের এই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৭১ মিনিটে বদলি হিসেবে নামার এক মিনিট পরেই স্কোরশিটে নাম তোলেন মার্কোস রাশফোর্ড। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে এসে জ্যাক গ্রিলিশ গোল করে ব্যবধান ৬-১ করে। আর অতিরিক্ত সময়ের ১১ মিনিটে ডি বঙে তারেমিকে ফাউল করেন জন স্টোনস। ভিএআর দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর স্পট কিক থেকে মেহদি তারেমি বল জালে জড়িয়ে ব্যবধান ৬-২ করেন। তবে ইংল্যান্ডের বড় জয়ের পথে কোন ধরনের বাধা হতে পারেনি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031