মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এ নিয়ে অনেকবারই নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তের রক্তক্ষয়ী মাদকবিরোধী যুদ্ধ নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই। বিশেষ করে, এবার তাদেরকে দুতের্তে বলেছেন, তারা চাইলে তাদের আর্থিক সহযোগিতা ফিরিয়ে নিতে পারে। পুলিশ কর্মকর্তাদের এক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘চলে যান, আপনাদের টাকা অন্য কোথাও নিয়ে যান। আমরা জাতি হিসেবে টিকে থাকতে পারবো।’ এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই একের পর এক মন্তব্য করে বিশ্বজুড়ে শিরোনাম হয়েছেন দুতের্তে। অশ্লীল ভাষায় গালাগালি, মানবাধিকারের তোয়াক্কা না করা, ইত্যাদি অনেক কারণে তাকে নিয়ে আলোচনা বেশ। সেখান থেকে বিন্দুমাত্র পিছু হটার কোন লক্ষণ নেই তার মধ্যে। ওই সম্মেলনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনারা আমদের কীভাবে দেখেন? ভিক্ষুক? আমরা টিকে থাকবো। যদি কষ্টের মধ্য দিয়েও যেতে হয়, আমরা টিকে থাকবো। কিন্তু তাই বলে আমাদের মর্যাদা নিয়ে কখনও আপোষ করবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আপনারা মনে করেন আপনাদের সহযোগিতা ফিরিয়ে নেওয়ার এটাই সময়, তবে তা-ই করুন। আমরা ভিক্ষা চাইবো না।’
প্রসঙ্গত, ৩০শে জুন দুতের্তে ক্ষমতায় আসার পর থেকে, পুলিশ ও অজ্ঞাত হামলাকারীদের হাতে ফিলিপাইনজুড়ে ৩৬৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। গত সপ্তাহে, দুই মার্কিন সিনেটর মাদকবিরোধী এই লড়াইয়ে ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা ফিলিপাইনকে দেওয়া আমেরিকান সহায়তা পর্যালোচনা করে দেখার আহ্বান জানান। সিনেটর বেন কার্ডিন বলেন, দুতের্তে যেসব কথা বলছেন ও যা সমর্থন করছেন তা বাছবিচারহীন হত্যাকা-ের সমপর্যায়ে পড়ে। অপর সিনেটর প্যাট্রিক লেহি বলেন, ‘হত্যাকা-ের কোন পরিমাণই কোন সংস্কারের জন্ম দেবে না যা বিচার বিভাগকে উন্নত করবে। দুর্নীতি রোধ করবে না, আইন শৃঙ্কলা বাহিনীর দ-মুক্তির অবসান ঘটাবে না। এমনকি যারা মাদকাসক্তির বিষাক্ত চক্রে আটকা পড়ে, তাদেরও পুনর্বাসন হবে না।’ মার্কিন তথ্য-উপাত্ত মতে, ২০১৭ সালে মোট ১৮.৮০ লাখ ডলার সহায়তা পাওয়ার কথা। ২০১৫ সালে ২৩.৬০ লাখ ডলার মার্কিন সহায়তা পেয়েছিল দেশটি। অপরদিকে ফিলিপাইনের প্রতি বার্ষিক ইইউ সহায়তা হলো ৬.৫ কোটি ডলার।
এক সাক্ষাৎকারে প্রখ্যাত মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের উপ-পরিচালক ফেলিম কাইন সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ফিলিপাইনে বিদেশী সহায়তা কর্তৃপক্ষের ‘বাছবিচারহীন অবৈধ সহিংসতা’র পেছনে ব্যয় হতে পারে। তবে নিজেদের নেওয়া কঠোর নীতির পক্ষে বৃহ¯পতিবার দুতের্তে বলেন, বিদেশী সরকারগুলো ‘কখনই বুঝবে না কী যন্ত্রণা আমরা ভোগ করছি।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031