পুলিশ নাটোরে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজানের টিবিএম নামে একটি ইটভাটা থেকে তিন শ্রমিককে উদ্ধার করেছে। এসময় মো. কালাম নামে ওই ভাটার ম্যানেজারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই শ্রমিকদের অপহরণ করে শরিফুল ইসলাম রমজানের মালিকানাধীন টিবিএম নামে ওই  ইটভাটায় আটক রেখে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে বলে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করার পর পুলিশ শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ওই ইটভাটা থেকে তাদের উদ্ধার করে। এসময় ওই ভাটার ম্যানেজারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার বরণডালী গ্রামের কফিল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি সদর থানায় ওই লিখিত অভিযোগটি দেন। অভিযোগটি পরে মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে পুলিশ।

উদ্ধার শ্রমিকরা হলেন- যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার বরনডালি গ্রামের পলাশ, টিপু ও মনিরুল ইসলাম।

আর গ্রেপ্তার মো. কালাম নাটোর সদর উপজেলার দিয়ারভিটা গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিকদার মশিউর রহমান জানান, মামলায় বাদী অভিযোগ করেন পলাশ, টিপু ও মনিরুল বিভিন্ন ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করেন। গত ৪ ডিসেম্বর তারা কাজের উদ্দেশ্যে সদর উপজেলার পন্ডিতগ্রামের একটি ইটভাটায় আসেন। পরের দিন ৫ ডিসেম্বর উল্লেখিত আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন তাদের বেশি দামে কাজ দেয়ার কথা বলে টিবিএম ইটভাটায় নিয়ে গিয়ে তাদের আটকে রাখেন। পরে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে উদ্ধার করতে স্বজনদের কাছে দুই লাখ টাকা নিয়ে দেখা করার কথা বলেন। ইত্যবসরে গত কয়েকদিন ধরে স্বজনরা স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। শনিবার তিন শ্রমিককে ছেড়ে দেয়ার কথা বলে আসামিরা নগদ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু তাদের ছেড়ে না দিলে বাদী কফিল উদ্দিনকেও আটকে রাখার চেষ্টা করেন এবং তিন শ্রমিককে ছাড়াতে আরো ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এই মামলার প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল থেকে তিন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয় এবং ভাটার ম্যানেজার মো. কালামকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রকৃত পক্ষেই এটা অপহরণ ও মুক্তিপনের বিষয় কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। চাঁদাবাজির বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে ইটভাটা মালিক সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, অপহরণ ও মুক্তিপনের বিষয়টি সঠিক নয় বানোয়াট। এটা একটি ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে একটি মহল ওই শ্রমিকদের দিয়ে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ইট উৎপাদন মৌসুমে শ্রমিকরা কাজের আগেই টাকা নিয়ে থাকেন। সম্প্রতি ওই তিনজনসহ প্রায় ১৫ জন শ্রমিক ভাটায় কাজ করার জন্য আগেই চুক্তিবদ্ধ হয়ে দাদন হিসেবে (অগ্রিম) ৩ লাখ টাকা তার কাছ থেকে নিয়ে গেছে। এদের মধ্যে এই তিন শ্রমিক তার ইটভাটায় কর্মরত ছিলেন। কয়েক শ্রমিক দলছুট হয়ে অন্য ভাটায় কাজ করতে যায়। তাদের ফিরিয়ে আনতে অন্য শ্রমিকরাই চেষ্টা করছেন। এ কাজে তিনিসহ তার কোন লোকজন জড়িত নয়। বাদীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। কারো প্ররোচনায় এই অভিযোগ করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031