ইতালিতে গতকাল রবিবার রেকর্ডসংখ্যক মানুষ মারা গেছে করোনাভাইরাসে । গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছে ৩৬৮ জন। এ পর্যন্ত মোট মৃত্যের সংখ্যা এক হাজার ৮০৯ জন।

ইতালিতে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে ২৪ হাজার ৭৪৭ জন, নতুন আক্রান্ত হয়েছে তিন হাজার ৫৯০ জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে দুই হাজার ৩৩৫ জন। এসব তথ্য জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে।

এরমধ্যে শুধু লোম্বারদিয়া প্রভেন্সিতে মৃত্যের সংখ্যা এক হাজার ২১৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে মৃত্যুবরণ করেছে ২৫২ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ২৭২ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় এই প্রভেন্সিতে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ৫৮৭ জন। লোম্বারদিয়া প্রভেন্সিতেই করোনাভাইরাস প্রকট আকার ধারণ করেছে। সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

করোনা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য পরামর্শ নিতে চীন থেকে একদল বিশেষজ্ঞ গতকাল ইতালিতে এসে পৌঁছেছে। ইতিমধ্যে তারা স্পালানজানি হাসপাতাল পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং ইতালিয়ান চিকিৎসকদের সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিতে আলোচনা করছেন।

এদিকে দেশটির প্রায় ছয় কোটি জনগণকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশিও রয়েছেন।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশটিতে জারি করা জরুরি অবস্থার মধ্যে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। গোটা ইতালি এখন থমকে আছে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। কোনো পর্যটক দেশটিতে প্রবেশ করতে পারছেন না। সরকারের কঠোর নির্দেশনা, অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন ঘর থেকে বাইরে বের না হয়।

করোনারভাইরাসের কারণে জনবহুল রোমও জনশূন্য। রোমের ক্লোসিয়াম, ফোনতানা ত্রেভি, ভেনেসিয়াসহ দর্শনীয় স্থানগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মিলানের দমো, কাস্তেল্লো, নাভিলিও এখন জনশূন্য। ভেনিসের সানমারকো, জেনেভার একুরিয়াম, পিজার হেলানোটাওয়ার সবকিছুই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখন ইতালির জনগণ বন্দি জীবনযাপন করছে। সুপার মার্কেটগুলোতে একসঙ্গে সবাইকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। সবসময় সেখানে দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলছে সরকার ঘোষিত প্রতিষ্ঠানগুলো। কিছু সুপার মার্কেট ও ক্লিনিকে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে, ইতালিজুড়ে মাস্কের খুবই অভাব দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে কয়েকটি ফার্মেসিতে মাস্ক পাওয়া যায়নি। বিক্রেতারা বলছেন, আগামী সপ্তাহে পাওয়া যেতে পারে।

জরুরি অবস্থায় যানবাহনও আগের মতো চলছে না। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে। ইতালির সরকার করোনার মহামারি সামাল দিতে নতুন নতুন আদেশ জারি করে একের পর এক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিচ্ছে। সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব প্রতিষ্ঠানই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সর্বত্র প্রশাসনের কঠোর নজরদারি, সর্বসাধারণের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গত কয়েক দিনে জনগণের অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরার জন্য দুই হাজারেরও বেশি লোককে জরিমানা করা হয়ে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে থমকে গেছে গোটা ইতালি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031