বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমার মিলিটারির ‘এথনিক ক্লিনজিং’অভিযানে হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ হারিয়ে, নানান ভাবে আহত হয়ে । মিয়ানমার মিলিটারিদের গুলি ও আগুনে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে কক্সবাজার, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু। তবে গুরুতর আহত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, মিয়ানমার সেনাদের দেয়া আগুন ও গুলিতে অঙ্গহানি হয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছে শত শত নারী-পুরুষ ও শিশু রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।আহত রোগীদের পাশাপাশি মারাত্মক মহামারি রোগ নিয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসছে অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী। এখন পর্যন্ত এইডস রোগে আক্রান্ত একজন রোহিঙ্গা শরণার্থী শনাক্ত করেছে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল।

বর্তমানে ওই রোগী সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। কক্সবাজার জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে আসা অধিকাংশ রোহিঙ্গাই চর্মসহ কোন না কোন রোগে আক্রান্ত। এখন পর্যন্ত (১৯ সেপ্টেম্বর) গুরুতর অসুস্থ ৩৪জন শিশু,প্রায় দেড় শতাধিক নারী ও ২০০-২৫০ রোহিঙ্গাকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

দুই গর্ভবতী রোহিঙ্গা নারী এই হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেছে। মা ও শিশু উভয়ে সুস্থ রয়েছে। তাছাড়া প্রতিদিন ৪০০-৫০০ রোগীকে আউট ডোরে চিকিৎসা দেয়া হয়। এছাড়ও একজন এইডস রোহিঙ্গা পুরুষ রোগী পাওয়া গেছে। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান হাসপাতাল কতৃপক্ষ।

উখিয়ার এলাকাবাসী জানান, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করায় আমরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। কারণ অধিকাংশ রোহিঙ্গারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তারা হয়তো অনেকেই ভয়াবহ ভাইরাস নিয়ে প্রবেশ করেছে। আমরা এলাকাবাসী ছেলে-মেয়েদের নিয়ে খুবই চিন্তার মধ্যে রয়েছি।

তাছাড়া খোলা আকাশের নিচে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী মলমূত্র ত্যাগ করছে। এতে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটেছে। এসব কারণে পুরো এলাকার বাতাস দুর্গন্ধময় হয়ে পড়েছে। এর মধ্যেই আমাদের বসবাস করতে হচ্ছে।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক এবং হাসপাতালের ‘আরএমও’ ডা. মো: শাহীন আবদুর রহমান চোধুরী বিডি২৪লাইভকে বলেন, মিয়ানমারের সেনাদের হাতে গুরুতর আহত রোগীদের চিকিৎসা এখানে দেয়া হচ্ছে। আর যারা গুরুতর নয়, তাদের চিকিৎসা উখিয়া, টেকনাফ ও স্থানীয় ক্লিনিকে দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালের কর্মক্ষমতার চেয়ে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তাই চিকিৎসা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। তবুও আমরা খুব ভালোভাবে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, এই হাসপাতালে একজন রোহিঙ্গা এইডস রোগী রয়েছে। আমরা তার চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে এ ধরনের রোগী নিশ্চই আরও রয়েছে এটা বাংলাদশের জন্য বড় ধরনের হুমকি। এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত। এই ধরনের বা এর চেয়েও বড় জীবাণু নিয়ে অনেকে বাংলাদেশে ঢুকতে পারে। আর এটা হলে সেটা আমাদের জন্য খুবই ভয়ের।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031