অ্যালেস্টার কুক শুক্রবার থেকে কেনিংটন ওভালে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে নামবেন। ক্যারিয়ারের বিদায়ী টেস্টে নামার আগে তিনি বেছে নিলেন তাঁর দেখা সর্বকালের সেরা দল। সেই সঙ্গে উসকে দিলেন বিতর্ক। আশ্চর্যের বিষয়, তাঁর দলে নেই কোনও ভারতীয় বা পাকিস্তানি ক্রিকেটার! আসুন কেমন স্বপ্নের দল গড়লেন কুক।

কুকের দলের অধিনায়ক গ্রাহাম গুচ। যিনি তাঁর কোচ এবং মেন্টর। কুকের ক্যারিয়ারে বিশাল অবদান রয়েছে গুচের। নিজের বেছে নেওয়া দলের ওপেনার বেছেছেন গুচকে। ৬৫ বছর বয়সী ১১৮ টেস্টে ৪৯.২৩ গড়ে করেছেন ৮৯০০ রান। রয়েছে ২০ শতরান ও ৪৬ অর্ধশতরান। ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্টে সর্বাধিক রানসংগ্রহকারীর তালিকায় তিনি দুইয়ে।

গুচের ওপেনিং পার্টনার হিসেবে কুক বেছে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ওপেনার ম্যাথু হেডেনকে। বাঁ-হাতি হেডেনকে নেওয়ায় ডান হাতি-বাঁ হাতি কম্বিনেশনও রইল। ১০৩ টেস্টে ৫০.৭৩ গড়ে হেডেন করেছেন ৮৬২৫ রান। সর্বাধিক ৩৮০। শতরানের সংখ্যা ৩০। অর্ধশতরান ২৯। এই দলে নিজেকে রাখেননি কুক।

মিডল অর্ডারে কারও জায়গা নির্দিষ্ট করেননি কুক। তাবে তাঁর দল আছেন ব্রায়ান লারা। ত্রিনিদাদের রাজপুত্র ১৩১ টেস্টে ১১৯৫৩ রান করেছেন। গড় ৫২.৮৮। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৪০০। শতরানের সংখ্যা ৩৪। অর্ধশতরান ৪৮। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংয়ের প্রধান ভরসা ছিলেন লারা। সচিনের সঙ্গে তাঁর নামও উচ্চারিত হত বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে।

রিকি পন্টিং হলেন ডন ব্র্যাডম্যানের পরে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান। রানের দিক থেকে অবশ্য তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বাধিক রানসংগ্রহকারী। ১৬৮ টেস্টে ৫১.৮৫ গড়ে করেছেন ১৩৩৭৮ রান। সর্বোচ্চ ২৫৭। শতরান করেছেন ৪১টি। অর্ধশতরান ৬২। পন্টিংয়ের বিরুদ্ধে অনেক বার খেলেছেন কুক।

এবি ডি’ভিলিয়ার্সকে বলা হয় তিনশো ষাট ডিগ্রির ব্যাটসম্যান। যে কোনও বলকে যে কোনও জায়গায় পাঠানোর বিরল ক্ষমতা ছিল তাঁর। উইকেটের সব দিকেই শট মারতে পারেন। ১১৪ টেস্টে ৫০.৬৬ গড়ে ৮৭৬৫ রান করেছেন তিনি। শতরানের সংখ্যা ২২। অর্ধশতরান ৪৬টি। উইকেটকিপিংও করতে পারেন ডি’ভিলিয়ার্স।

কুক অবশ্য দলে কুমার সাঙ্গাকারাকেও রেখেছেন। কুক তাঁর দলে উইকেটকিপার হিসেবে কাউকে নির্দিষ্ট করে বেছে নেননি। ডি’ভিলিয়ার্সের পাশাপাশি কুমার সাঙ্গাকারাকেও রেখেছেন দলে। বলেছেন, দু’জনের মধ্যে যে কোনও একজন কিপিং করবেন। সাঙ্গা অবশ্য ব্যাটসম্যান হিসেবেও খেলতে পারেন। ১৩৪ টেস্টে ১২৪০০ রান রয়েছে তাঁর। গড় ৫৭.৪০। শতরান ৩৮, অর্ধশতরান ৫২।

জ্যাক কালিসকে বলা হয় এই সময়ের সেরা অলরাউন্ডার। সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে যাঁকে মেনে নিয়েছে ক্রিকেটবিশ্ব, সেই গ্যারি সোবার্সের সঙ্গে তুলনাও চলে তাঁর। ১৬৬ টেস্টে ১৩২৮৯ রান, সঙ্গে ২৯২ উইকেট। অবিশ্বাস্য পরিসংখ্যান তাঁর। ৪৫ শতরানের পাশাপাশি টেস্টে পাঁচ বার নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। সঙ্গে টেস্টে ২০০ ক্যাচ।

শেন ওয়ার্ন আবার খুব কাছাকাছিই থাকবেন মুরালিধরনের। ৪৮ বছর বয়সী ১৪৫ টেস্টে নিয়েছেন ৭০৮ উইকেট। গড় ২৫.৪১। পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ৩৭ বার। ১০ উইকেট নিয়েছেন ১০বার। ওয়ার্নের এক ডেলিভারি বিখ্যাত হয়ে রয়েছে শতাব্দীর সেরা হিসেবে। লেগব্রেককে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। টেস্টে তিনিই প্রথম ৭০০ উইকেট নেন।

কুকের দলে রয়েছেন দু’জন স্পিনার। একজন শ্রীলঙ্কার অফস্পিনার মুথাইয়া মুরালিধরন। টেস্টে আটশো উইকেট নিয়েছেন তিনি। গড় মাত্র ২২.৭২। পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ৬৭ বার। ১০ উইকেট নিয়েছেন ২২বার।

কুকের দলে দুই পেসারের অন্যতম হলেন জেমস অ্যান্ডারসন। দীর্ঘ সময় ধরে দু’জনে এক সঙ্গে খেলেছেন। অ্যান্ডারসনের বলে প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে একাধিক ক্যাচ ধরেছেন কুক। জানেন অ্যান্ডারসনের সুইং কতটা মারাত্মক হতে পারে। ১৪২ টেস্টে ৫৫৯ উইকেট নিয়েছেন ডানহাতি পেসার। গড় ২৬.৯০। পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ২৬বার, ১০ উইকেট নিয়েছেন তিন বার।

কুকের দলে দ্বিতীয় পেসার হলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। টেস্টে ৫৬৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। যা জোরে বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বিশ্বের সেরা পেসার ছিলেন। নিখুঁত নিশানা ছিল শক্তি। পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ২৯ বার। ১০ উইকেট নিয়েছেন তিন বার। গড় মাত্র ২১.৬৪। কুকের দলে নতুন বলে শুরু করবেন ম্যাকগ্রা-অ্যান্ডারসন। পরে আসবেন কালিস।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031