১০ মিনিটে পৌঁছেছেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলা থেকে ইস্কাটন গার্ডেনে শফিকুল ইসলাম। কর্মদিবসে যেখানে সময় লাগে এক ঘণ্টার বেশি। রোজার যানজটে যা ছাড়ায় দুই ঘণ্টাও। সেখানে এতো কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাটা কেবল স্বস্তির নয়, অন্য রকম এক অনুভূতিও বটে।
কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছার আনন্দে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতেও দেখা যাচ্ছে নগরবাসীকে। কে কম কম সময়ে পৌঁছেছে-সেই কথা জানিয়ে আক্ষেপ করতেও দেখা গেছে কেন সারা বছর এমন হয় না।
এই চিত্র বরাবর দেখা যায় ঈদে। সারাবছর দেশবাসীর স্রোত থাকে নগরমুখী, আর ঈদে থাকে উল্টো চিত্র। শহর ছেড়ে গ্রাম আর মফস্বলের দিকে থাকে জনস্রোত। আর চির কোলাহলের মহানগর হয় ফাঁকা।
এই সময়টায় রাজধানীতে থাকে না দীর্ঘ যানজট আর গাড়ির শব্দ। পথে পথে দুর্ভোগ, রাস্তা ও ফুটপাথে পথচারীদের ভিড়ও উধাও। গাড়ির ধীর গতি নয়, বরং পাওয়া যায় রাস্তায় চাকার ঘর্ষণের শব্দ।

রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে অল্প কিছু প্রাইভেট কার, অটেরিকশা, মোটর সাইকেল আর প্রধান সড়কে রিকশার চলাচল।
রাস্তার ওপর রিকশার ঘণ্টার টুংটাং শব্দ, দু-চারটি বাস-গাড়ির সশব্দে ছুটে চলা, অল্প কিছু লোকের হেঁটে চলা এই ছিল রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র গুলিস্তানের শুক্রবার সকালের চিত্র।
তবে এর মধ্যেও যারা বাসে চলাচল করছেন, তারাও কিছুটা ঝামেলায় পড়ছেন। কারণ, পর্যাপ্ত বাসের অভাব। নগর পরিবহনে চলাচলকারী বাসের শ্রমিকদেরও কেউ কেউ চলে গেছেন বাড়িতে, কোনো কোনো বাস আবার ছুটেছে আশেপাশের জেলার দিকে। আর যাত্রী মিলবে না ভেবে রাস্তায় নামেনি একটি অংশ। সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এই চিত্র।
আবার বাসে উঠলেও মানতে হচ্ছে ঈদ বকশিসের দাবি, এমনিকেই নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায় করা যানবাহনগুলো সেই অতিরিক্ত ভাড়ার চেয়েও দ্বিগুণ আদায় করছে যাত্রীদের কাছ থেকে।

ফারুক আলমের বাসা রাজধানীর মাতুয়াইলে। অফিস করবেন কারওরান বাজার। সকাল আটটা থেকে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো গাড়ি পাননি তিনি।
জানালেন, দুইএকটি গাড়ি আসলেও তা আবার সিটিং। যেসব গাড়ি সব সময় লোকাল চালায় তারাও আজকে সিটিং চলছে। এসব কারণে যাত্রী সংকট। পরে তিনি বাধ্য হয়েই পাঠাও রাইডারে বাংলা মটর পৌছেছেন। এতে তারা খরচ পড়েছে ১৬০ টাকা। যেখানে তার ভাড়া লাগতো ২০ টাক।

প্রধান সড়কগুলোতে রিকশা, অটোরিকশা এবং হালকা যানবাহনে টুকটাক কাজ সেরে নিতে বেড়িয়েছেন অনেকেই। সেখানেও আছে যত খুশি ভাড়া আদায়ের চিত্র।
ফাঁকা রাজধানীতে একমাত্র কর্মব্যস্ত বিপনীবিতান। ঈদের আগের দিন, এমনকি ঈদের চাঁদ দেখে কেনাকাটাও করেন অনেকেই। তাদের কারণেই ভিড় আছে বিপনিবিতানে। বসুন্ধরা শপিং মল, গাউছিয়া, নিউমার্কেট, গুলিস্তান, কর্ণফুলী, মৌচাক মার্কেটের সামনে মানুষের ব্যাপক জটলা লক্ষ্য করা গেছে।
