ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগ নতুন ধরনের মাদকদ্রব্যের একটি চালান ধরেছে । এই মাদকটির বেশ কিছু নাম রয়েছে। যেমন সেবু, ক্রিস্টাল ম্যাথ, ডি-মাথ। তবে এই মাদকের বৈজ্ঞানিক বা কেমিক্যাল নাম মেথাম ফিটামিন। যদিও এটি দেশে আইস নামেই বেশি পরিচিত।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আক্তার এ তথ্য জানান।

হাফিজ আক্তার বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে দেশে উচ্চবিত্তের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে এই দামি মাদকের বাজার ধরতে এটি আমদানি করা হয়েছিল। এটি অতি মূল্যবান মাদক। আসক্তদের কাছে ১০ গ্রাম বিক্রি করা হয় এক লাখ টাকায়। যার ফলে সমাজের অতি বিত্তশালীদের সন্তানরা এটি ব্যবহার করে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ মাদকে আসক্তরা দীর্ঘসময় কাজ ও চিন্তা করার সামর্থ পায় বলে মনে করে। যদিও দীর্ঘদিন এটি ব্যবহার করলে হৃদরোগ ও ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া মুখের সব দাত ক্ষয় হয়ে যায়। এটি গ্রহণে স্থায়ী হেলুসিনেশন সৃষ্টি হয়।

মাদকটির পরিচয় দিতে গিয়ে হাফিজ আক্তার বলেন, এটি স্নায়ু উত্তেজক ড্রাগ। এটি গ্রহণে হরমোন উত্তেজনা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ১ হাজার গুণ বেড়ে যায়। এছাড়া এটি ইয়াবার চেয়ে একশ গুণ বেশি ক্ষতিকর।

তিনটি উপায়ে এই মাদকটি গ্রহণ করা হয়। আসক্তরা একটি কাচের বিশেষ পাত্রে বিক্রিয়া তৈরী করে ধূমপান করে। যাকে বলা হয়ে থাকে বং। এছাড়া ইনজেক্ট ও ট্যাবলেট হিসেবেও এটি গ্রহণ করা হয়। এটির উৎপত্তি অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, চায়নাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজধানীর গেন্ডারিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে চন্দন রায় নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যে রাজধানীর গুলশান, বনানী, বসুন্ধরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬শ গ্রাম আইস উদ্ধার করা হয়। যার বাজার মূল্য ৬০ লাখ টাকা। প্রতি ১০ গ্রাম মাদকের দাম এক লাখ টাকা। সে হিসেবে প্রতি গ্রাম মাদকের দাম ১০ হাজার টাকা। এ সময় এই মাদক বহন ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত সিরাজ, অভি, জুয়েল, রুবায়েত ওরফে বং এবং ক্যানিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চন্দন সম্পর্কে গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, চন্দন রায় মাদকের এই চালানের মূল ডিলার। চন্দন মূলত একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তিনি ওই ব্যবসার আড়ালে মাদকের ব্যবসায় করেন। তিনি তার প্রবাসী এক আত্মীয় শংকর বিশ্বাসের মাধ্যমে বিমানে করে ঢাকা এনেছেন। পরে সেগুলো উচ্চবিত্তদের কাছে খুচরা বিক্রি করছিলেন।

তার বিরুদ্ধে গেন্ডারিয়া থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই মাদকের চালানের সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031