রোহিঙ্গারা উখিয়া উপজেলার কুতুপালং শরণার্থী শিবির ও বস্তিতে বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা থাকার সুবাধে কুতুপালং রোহিঙ্গা বাজারে ব্যাপকহারে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক অবৈধ ফার্মেসি। আর এসব ফার্মেসিতে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে । কোনোরকম পড়ালেখা বা প্রশিক্ষণ ছাড়াই দিব্যি ডাক্তারগিরি চালিয়ে যাচ্ছে এসব রোহিঙ্গা ডাক্তার। পরিচিত কথা ও ব্যবহারের কারণে ক্যাম্প ও বস্তিতে অবস্থান করা রোহিঙ্গারাও এসব ডাক্তারের শরণাপন্ন হচ্ছে। কিছুদিন এলাকার বিভিন্ন ফামের্সিতে চাকরি করে স্থানীয় বেকার যুবকরাও নামের পার্শ্বে ডাক্তার উপাধি ব্যবহার করছে এখানে। সাধারণ রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। ভুল চিকিৎসার শিকারও হচ্ছে সাধারণ রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গারা নামের নামের আগে ডাক্তার লিখলেও স্থানীয় প্রসাশনের কোনো  মাথাব্যথা নেই।
সরজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা বাজার হিসেবে পরিচিত কুতুপালং এলাকায় শরণার্থী ক্যাম্প ও বস্তিকেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক ফার্মেসি। এসব ফার্মেসি মালিকদের মধ্যে রয়েছে আনোয়ার, জয়নাল, খুরশেদ আলম, সেলিম, উছমান, জয়নাল, জালাল উদ্দিন, জাফর আহামদসহ আরো অনেকে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই রোহিঙ্গা। কিছু কিছু ফার্মেসি মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবসার অন্তরালে মিয়ানমারে ওষুধ পাচার ও ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এসব রোহিঙ্গা ডাক্তার ফার্মেসি ব্যবসার বদৌলতে সাধারণ রোহিঙ্গাদের কাছে এখন নামি ডাক্তার হিসেবে পরিচিত। তাছাড়া কিছুদিন আগে স্থানীয় যুবকদের অনেকে যারা জড়িত ছিলেন ওষুধের দোকানের ফার্মাসিস্ট কিংবা সরকারি বেসরকারি কোনো মেডিকেল সহকারী বা নার্স তারা আজ কুতুপালং বাজারে সাইনবোর্ডধারী বড় বড় বিশেজ্ঞ ডাক্তার। অথচ এসব হাতুড়ে ডাক্তার ঠিকমতো ওষুধের নাম পর্যন্ত ঠিকমতো লিখতে পারে না। লিখতে পারে না, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার নাম। আর যা লিখে তাতেও থাকে ভুলে ভরা এবং তাদের প্রেসক্রিপশন দেখলেই শিক্ষাগত যোগ্যতার পরিধি বুঝা যায়। এভাবে নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করে বিভিন্ন ডিগ্রির নামসর্বস্ব সাইনবোর্ডে লাগিয়ে সারা দিন রোগীদের অপচিকিৎসার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে বহাল তবিয়তে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়ে গেলেও কোনোদিন প্রশাসনের কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হয়নি। এসব ডাক্তারের চেম্বারে দেখা গিয়ে দেখা যায়, সকাল-বিকাল রোগীদের ভিড়। রোগীদের কাছ থেকে ভিজিট নিচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। এসব ডাক্তারের অভিজ্ঞতা কেউ এসএসসি পাস আবার কেউ এইচএসসি পাস। আর এ অনভিজ্ঞতার কারণে এ হাতুড়ে ডাক্তাররা সহজে রোগীদের ধরিয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন  আজেবাজে কোম্পানির হাই-পাওয়ারি এন্টিবায়োটিক ওষুধ। বেশ কয়েকটি ফামের্সি থেকে রাতের আঁধারে মিয়ানমারে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ পাচার ও ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রির অভিযোগ করেছেন স্থানীয় জনগণ। মিয়ানমারে ওষুধ পাচার কাজে ফার্মেসি মালিকরা স্থানীয় চোরকারবারীদের পাশাপাশি সাধারণ রোহিঙ্গাদের ও ব্যবহার করে থাকে। এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বেেলন, ইতিমধ্যে কুতুপালং বাজারে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে কয়েকটি ফার্মেসিকে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031