চলচ্চিত্র পরিবার নায়করাজ রাজ্জাক স্মরণে গতকাল এক শোকসভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ । সকাল ১১টায় এফডিসির ৮ নম্বর ফ্লোরে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে চলচ্চিত্রের শিল্পী-কলাকুশলীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা সোহেল রানা, আলমগীর, ফারুক, মিশা সওদাগর, ড্যানি সিডাক, ওমর সানী, ফেরদৌস, জায়েদ খান, বাপ্পি, অভিনেত্রী সুজাতা, সুচন্দা, দিলারা, রোজিনা, চম্পা, অরুণা বিশ্বাস, শাহনূর, অপু বিশ্বাস, শিল্পী, অমৃতা, পরিচালক আমজাদ হোসেন, দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, আব্দুল লতিফ বাচ্চু, মনতাজুর রহমান আকবর, মতিন রহমান, মুশফিকুর রহমান গুলজার, এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষ, সাংবাদিক আব্দুর রহমান, নৃত্যপরিচালক মাসুম বাবুল, ইমদাদুল হক খোকন, পরিচালক সাইদুল ইসলাম সাঈদ, সি বি জামান, শেখ নজরুল ইসলাম, ওয়াকিল আহমেদ, ছটকু আহমেদ, প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ, সাধারণ সম্পাদক কাজী শোয়েব রশিদ, প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু, রশিদুল আমিন হলিসহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানের শুরুতে নায়করাজের ছেলে বাপ্পারাজ শোকার্ত কণ্ঠে বলেন, বাবা আজ নেই। এভাবে আজ আসবো এখানে সেটা জানতাম না। বাবার জীবন ছিল খোলা বইয়ের মতন। কিছু বিষয় এখানে আজ পরিষ্কার করে বলতে চাই, রাজ্জাক সাহেব সিনেমা হল না করে মার্কেট করেছেন এই কথাটা অনেককে বলতে শুনেছি আমি। কিন্তু কথাটা ঠিক না। তিনি মার্কেটই করতে চেয়েছিলেন, আর সিনেমা হল করার ইচ্ছে থাকলেও তা রাজউক অনুমতি দেয়নি। আর এমনও একটা খারাপ সময় গেছে আমাদের বাড়ির একটা অংশের ফ্ল্যাটও বিক্রি করতে হয়েছিল। তার মনে কোনোদিনই লোভ ছিল না। মানুষ তার মৃত্যুতে অনেক কেঁদেছেন, এত ভালোবাসে মানুষ তিনি তা নিজ চোখে দেখে যেতে পারেন নি। আর একটা কথা রাজ্জাক সাহেব কখনো এই ইন্ডাস্ট্রিকে আলাদা করে যায়নি। এই ইন্ডাস্ট্রিকে আমার বাবার পাশে থেকে আমি সবচেয়ে বেশি দেখেছি। ইন্ডাস্ট্রিতে রাজ্জাক সাহেব তো দুই ছেলেকে দিয়েছেন। তিনি দুই নাম্বারি করে কখনোই কিছু করেননি। ইন্ডাস্ট্রিতে যে নিষিদ্ধ খেলাটি চলছে তা বন্ধ করে সবাই এক না হলে আমি আর এফডিসিতে আসবো না। অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী সুচন্দা বলেন, ‘বেহুলা’ আমার দ্বিতীয় ছবি। নায়করাজকে নিয়ে অনেক কথা আমার বলার আছে। উঁচুমনের মানুষ ছিলেন তিনি। আমাকে অনেক সম্মান করতেন। রোজিনা বলেন, রাজ্জাক ভাইয়ের নামে ফ্লোর বা স্ট্যাচু চাই এই এফডিসিতে। নূতন বলেন, রাজ্জাক সাহেব আমার টিচার ছিলেন। ওনার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। এখন ইন্ডাস্ট্রিতে সিনিয়র হয়ে গেলে দাম থাকে না। কিন্তু আমরা সবসময়ই গুরুজনদের শ্রদ্ধা করে এসেছি। এমন পরিবেশ সামনেও দেখতে চাই। অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক সোহেল রানা বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র যতদিন বেঁচে থাকবে রাজ্জাক তোমার নাম ততদিন থাকবে। তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। অভিনেতা আলমগীর বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে নায়করাজের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। তখন থেকে তিনি কখনো আমার বড় ভাই, কখনো বা আমার বন্ধু। অনেক কিছু শিখিয়েছেন তিনি আমাকে। অনেক বড় মনের মানুষ ছিলেন। সবাই তার জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করবেন। চিত্রনায়ক ফারুক বলেন, আমি নায়করাজকে বড় ভাই বলে থাকি। তিনি নেই আজ এটা আমি বিশ্বাস করি না। এইতো আমার মনে হয় পাশে থেকে দাঁড়িয়ে আজ আমার কথা শুনছেন তিনি। আর চলচ্চিত্র পরিবার স্মৃতি মুছে ফেলার জন্য বানানো হয়নি, রাজ্জাক ভাই ছিলেন, আছেন এবং আমাদের হৃদয়ে থাকবেন। তিনি একজন প্রকৃত শিল্পী ছিলেন। শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, রাজ্জাক সাহেব আধুনিক, সামাজিক ও ধার্মিক একজন মানুষ ছিলেন। আভিনেতা হিসেবে আমি ওনার দারুণ একজন ভক্ত। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন জেমী, ফেরদৌস ও জায়েদ খান।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031