এম্বুলেন্স চালকদের কাজ বেড়েছে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী বাড়ায় । তারা রোগী নিয়ে ছুটছেন এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে। তবে বেশি শ্বাসকষ্টের রোগী পরিবহনে নানা জটিলতায় পড়ছেন তারা। আইসিইউ লাগে এমন রোগীদের এম্বুলেন্সে তুলতে অনেকের অনীহা। কারণ এমন রোগীদের জন্য আইসিইউ পেতে দীর্ঘ সময় এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরতে হয়। এছাড়া দীর্ঘ সময় লাগে অক্সিজেন সাপোর্ট। অনেক সময় অক্সিজেন ফুরিয়ে যায়।
ঢাকা মেডিকেলের সামনে রোগীর অপেক্ষায় থাকা এম্বুলেন্স চালক নবী হোসেন বলেন, করোনা রোগী নামাতে অনেক সময় লেগে যায়।

অক্সিজেন লাগে। তাই অন্য রোগী টানি। এটা ঢাকার এম্বুলেন্স। এম্বুলেন্সে রোগী মারা গেছে কয়েকবার। করোনার রোগী নিলে অনেকক্ষণ ঘোরা লাগে। তারপর আবার মারা গেলে লাশ নিয়ে যাওয়া লাগে। একটা যাত্রীর পিছনে অনেক সময় যায়। এই জন্য এই রোগী কম টানার চেষ্টা করি বলেন- নবী হোসেন।

আরেক এম্বুলেন্সচালক মো. ইব্রাহীম বলেন, বেশ কয়েকবার এমন হয়েছে এবং রোগী নিয়ে কয়েক হাসপাতাল ঘুরতে হয়েছে। গত মাসে এক রোগীক নিয়ে ঢাকা মেডিকেল, মুগদা হাসপাতাল, কুর্মিটোলা হাসপাতাল নিয়ে গেছি। পরে অসহায় রোগীটা মারা যায়। তিনি বলেন, অক্সিজেনটা হলো এখন সোনার হরিণ। অক্সিজেন ভরতে (রিফিল) লাগে ৩০০ টাকা। কিন্তু এখন অক্সিজেন ভরতে লাগে প্রায় ডাবল টাকা।
আরেক এম্বুলেন্সচালক পাপ্পু বলেন, মার্চে একটা রোগী পাইছিলাম এই রোগীকে নিয়া তিন হাসপাতাল ঘুরছিলাম। প্রথতে রোগীকে নিয়া যাই নিউরোসাইন্স হাসপাতাল, সেখান থেকে নিয়ে আসলাম সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল। শেষে মুগদা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এমনো হয়েছে রোগীকে নিয়ে এক কিলোমিটারের রাস্তা ঠিক করি কিন্তু কয়েক ঘণ্টা এম্বুলেন্সে রাখতে হয়। ধরেন ঢাকা মেডিকেল থেকে মিডফোর্ডের রোগী নিই এই রোগী নামাইতে দুই ঘণ্টা সময় লাগে।
এম্বুলেন্সচালক আলিম রহমান বলেন, আমাদের গাড়ি চালু থাকে এবং গাড়িতে গ্যাস পুড়তে থাকে। আমরা অক্সিজেনের গাড়ি ভাড়া নেই না। তবে নিলেও ভাড়া বেশি না নিলে হয় না। এখান থেকে (ঢাকা মেডিকেল) ধরেন সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল নিয়ে যাবো ১০০০/১২০০ টাকা নিই।
এম্বুলেন্স পেতে করোনা আক্রান্ত রোগীদেরও নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেলের সামনে রোগীর বেশ কয়েকজন স্বজন এমন অভিযোগ করেন। তারা বলেন, ভয়ে অনেক চালক যেতে চান না। আবার কেউ কেউ রোগীর শ্বাসকষ্ট আছে কিনা জানতে চায়। অক্সিজেন সাপোর্ট লাগলে অনীহা দেখায়। তবে বেশ কয়েকজন চালক জানিয়েছেন, রোগীর অবস্থা যাই হোক  রোগী পেলেই তারা গন্তব্যে যেতে রাজি হন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর এম্বুলেন্স মালিক সমিতির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, এম্বুলেন্সে কিছু অসাধু লোক ঢুকে গেছে। যারা সুযোগ বুঝে মানুষকে ফাঁদে ফেলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন। একটা ঘটনা শুনলাম রাজশাহী থেকে একজন করোনা রোগীকে নিয়ে এসেছে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে। যাই হোক আমরা চাই সকলেই সেবা পাক। আজ আমারও করোনা হতে পারে। এমন হলেতো আমিও সেবা পাবো না। এমনটা হলে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। এম্বুলেন্সের জন্য সরাসরি যোগাযোগ না করে ৯৯৯ বা ৩৩৩’তে যোগাযোগ করবার জন্য তিনি পরামর্শ দেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031