ঢাকায় অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) ৬৩তম সম্মেলনের সিডব্লিউপি’র স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ এসেছে বলে শনিবার রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে আয়োজিত প্রেস বিফ্রিংয়ে এডভোকেট ফজিলাতুন নেছা বাপ্পি এমপি জানান।

নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারী ও পুরুষের সমতা আনয়নের লক্ষ্যে সংসদে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ নারীদের দেখতে চায় কমনওয়েলথ উইমেন পার্লামেন্টারিয়ানদের (সিডব্লিউপি) স্টিয়ারিং কমিটি।

সিপিএ মিডিয়া কমিটির সদস্য ফজিলাতুন নেছা বাপ্পি বলেন, ‘২ নভেম্বর থেকে সিডব্লিউপি’র স্টিয়ারিং কমিটির যে বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখান থেকে কিছু সিদ্ধান্ত এসেছে। সেখানে নারীদের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়। সিপিএ-এর আওতায় ৫২টি দেশের মধ্যে ১২টি দেশে কোনো নারী সংসদ সদস্য নেই। অথচ সারা বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। এ অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে পেছনে রেখে কিংবা রাজনীতিতে সম্পৃক্ত না করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত না করে উন্নয়ন আশা করা যায় না। সিপিএ এমন একটা পৃথিবী চায় যেখানে নারী ও পুরুষের সমতা থাকবে। এজন্য আমরা কমপক্ষে ৩০ শতাংশ নারীদের সংসদে দেখতে চাই।’

বাপ্পি বলেন, সিডব্লিউপি প্রতিনিধিদের নিয়ে শুক্রবার জাতীয় মহিলা সংস্থায় দেখানো হয়েছে কীভাবে তৃণমূল পর্যায়ের প্রান্তিক নারীরা অর্থনৈতিকভাবে সফল হচ্ছেন। এছাড়া ঢাকা মেডিকেলের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারও তাদের দেখানো হয়। আজ সিডব্লিউপি’র প্রতিনিধিরা টঙ্গীতে পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেন।

মিডিয়া কমিটির আরেক সদস্য তানভীর ইমাম এমপি বলেন, ঢাকায় অনুষ্ঠিত সিপিএ’র ৬৩তম সম্মেলনের প্রথম পর্যায়ে ২ নভেম্বর শুরু হওয়া স্মল ব্রাঞ্চের বিভিন্ন সেমিনার থেকে দুর্নীতি দূর করা, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তির কাজে সচ্ছতা, নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করা, জলবায়ু দূষণরোধে কার্যকর ভূমিকা নেয়াসহ বিভিন্ন প্রস্তাব এসেছে।

তানভীর ইমাম বলেন, শুক্রবার দ্বিতীয় প্ল্যানারি সেশন থেকে চারটি সুপারিশ এসেছে। এর প্রথমটি ছিল সিপিএ স্মল ব্রাঞ্চেস নিজেদের এবং বিশ্বের অন্যদেশ গুলোকে কারিগরি সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা ইন্টারশিপের মাধ্যামে উৎসাহিত করা। দ্বিতীয় প্রস্তাবটি ছিল সিপিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্পদ এবং অভিজ্ঞতা বিনিমিয়ের মাধ্যমে নিজ অধিক্ষেত্রে কাজ করে যাবে। তৃতীয়টি ছিল সিপিএ নিয়মিতভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দাতা সংস্থার সঙ্গে স্মল বাঞ্চেস দেশগুলোর বৃহত্তর পরিসরে সহযোগিতা করে যাবে। আর চতুর্থ সুপারিশ ছিল সিপিএর সংসদ ও এমপিদের জন্য সহযোগিতামূলক সেবা ও সুযোগ তৈরিতে দৃঢভাবে উৎসাহিত করবে।

এসময় ফজিলাতুন নেছা বাপ্পী বলেন, তৃতীয় দিনের সেশনে প্রস্তাব হলো দুর্নীতি বন্ধের ক্ষেত্রে আইন প্রণেতারা ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে তিনটি সুপারিশের কথা উল্লেখ করার মতো। একটি হলো-রাষ্ট্র রাজনীতি ও সম্প্রদায় থেকে যেকোনো মাত্রার দুর্নীতি দূর করতে আইন প্রণয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবশ্যই রাষ্ট্র, রাজনীতি এবং সম্প্রদায় থেকে একটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এসব প্রস্তাবের বিষযে সংসদ সদস্যরা ঐকমত্য পোষণ করেছেন।

তিনি বলেন, চতুর্থ প্ল্যানারি সেশন থেকে দুটি প্রস্তাব এসেছে। সেই দুটি হচ্ছে অতিরিক্ত মাছ আহরণ, চুরি করে শিকার করা, আবাসস্থল ধ্বংস, দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ন্যায় হুমকি থেকে সম্পদকে নিরাপদ করতে সংসদকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবটি হলো, সংসদকে আঞ্চলিক জলরাশির গুরুত্ব নির্ধারণ করে প্রাকৃতিক পরিবেশকে সমুন্নত রেখে নবায়ণযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

৫ নভেম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তজার্তিক সম্মেলন কেন্দ্রে দ্বিতীয় পর্বের সম্মেলন শুরু হবে। সেখানে প্রস্তাবগুলো নির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।

সিপিএ অন্তর্ভুক্ত ৪৩টি দেশের জনসংখ্যা পাঁচ লাখের নিচে। এসব দেশকে সিপিএ’র ‘স্মল ব্রাঞ্চ’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031