করোনা আতঙ্কে সারাবিশ্ব। শুক্রবার মধ্যরাত। মানুষের সব চিন্তা-চেতনা, হাসি-আনন্দ কেড়ে নিয়েছে ভয়াবহ এই ভাইরাস। ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি জঁপতে জঁপতে মানুষ চোখের অশ্রু ফেলছে। পবিত্র কাবা ও মসজিদে নববী চত্বরে প্রবেশ ও নামাজ আদায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সৌদি আরবে বাকি মসজিদগুলো বন্ধ।

গির্জাসহ বিভিন্ন উপাসনালয় বন্ধ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু এই রাতের অন্ধকারে বৃটেনের পানশালা বা মদপানের আসরগুলোতে স্বল্পবসনা যুবতীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। করোনা আতঙ্ক তাদেরকে  ছুঁতে পারেনি।

তারা সুরার পেয়ালা হাতে উদ্দাম নাচে মত্ত। চলছে নাচ, রঙ্গ, রসিকতা, গল্প। নানা কিসিমের আড্ডা। করোনা ভাইরাসে বৃটেনে ১৭৭ জন মারা গেছেন। এতে তাদের মধ্যে কোনো কুচ্‌পরোয়া নেই। তারা এক হাতে মদের পেয়ালা, অন্য হাতে পানির বোতল নিয়ে খোশগল্পে মত্ত। নানা রকম অঙ্গভঙ্গি করে জানান দিচ্ছেন যৌবনের উচ্ছলতা। ফলে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পুরোপুরি লকডাউন করে দিয়েছেন এসব পানশালা, রেস্তরাঁ, জিম ও অবকাশযাপন কেন্দ্রগুলো। শুক্রবার রাত থেকে এসব বন্ধ এমন আভাস পেয়ে যুবক-যুবতীদের ঢল নামে পাব বা পানশালায়। এমন সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, শুক্রবার রাত ছিল এসব পানশালার জন্য সর্বশেষ রাত। এরপরই এসব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাই এতে ভিড় জমিয়েছিলেন যুবারা।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, করোনা ভাইরাস বা কভিড-১৯ এর কারণে শনিবার থেকে পাবগুলোর শাটার বন্ধ করে দিতে হচ্ছে- এমন সিদ্ধান্ত হৃদয় ভেঙে দিতে পারে। এর আগে ওয়েদারস্পনস-এর চেয়ার টিম মার্টিন বলেন, কর্মকর্তাদের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও পাবগুলো বন্ধ করে দেয়া অগ্রাধিকারে রয়েছে। সরকার করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে সবাইকে ঘরের ভেতর অবস্থান করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু যারা শুক্রবার রাতে ওই পোশাকে ও মেজাজে বাইরে গিয়েছিলেন, রাতভর নেচেছেন পার্টিতে, তাদেরকে এই উদ্বেগ হয়তো স্পর্শ করতে পারেনি। তারা হয়তো পাত্তাই দিচ্ছেন না করোনাকে। তাই তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শকে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জনসন পাব বন্ধের যে ঘোষণা দিয়েছেন তা কয়েক হাজার পাব-এ সম্প্রচার করা হচ্ছিল এ সময়। ফলে সেখানে সমবেতরা শুক্রবারের রাতকে মদ পানের শেষ রাত হিসেবে উৎসবের সঙ্গে পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পাব, থিয়েটার, সিনেমা, জিম অবিলম্বে বন্ধ রাখতে হবে।

শনিবার থেকে এসব আর খোলা যাবে না।
ওদিকে শুক্রবার বৃটেনে করোনা ভাইরাসে মারা গেছেন ৪০ জন। এনিয়ে সেখানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭৭। আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৪০০০। তবে প্রকৃত সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031