বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে বিসিজি টিকার ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি দ্য ল্যানচেট ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি চিঠিতে এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেডরস অ্যাডহানম ঘেব্রেইয়েসুস এবং অন্যরা ওই চিঠিতে কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে বিসিজি টিকা ব্যবহার নিয়ে কয়েকটি জটিল বিষয় তুলে ধরেছেন। তারা এই টিকা স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর প্রয়োগ করার আগে এর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার পরীক্ষা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, গ্রিসসহ বেশ কয়েকটি দেশে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে যে বিসিজি টিকার সঙ্গে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার হ্রাসের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা। স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের মধ্যে কোভিড-১৯ এর তীব্রতা এই টিকা হ্রাস করতে পারে কি না সেটি দেখতেই এই টিকা ব্যবহৃত হচ্ছে।

তারা বলছেন যে, বিসিজি টিকা পরবর্তী সংক্রমণ যাতে না ঘটে শরীরের সেই পদ্ধতির উন্নতি ঘটায়। সেক্ষেত্রে এই টিকা কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ও সেরে উঠার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।

গত ২৮ মার্চ মেডআরএক্সআইভিতে পোস্ট করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, যেসব দেশে বিসিজি টিকা দেয়া হয় সেসব দেশে করোনার সংক্রমণ কম। এছাড়া ওই সব দেশে মৃত্যুর হারও কম। যদিও ওই গবেষণা পর্যালোচান এবং কোনো বিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত হয়নি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চিঠিতে পাঁচটি কারণ উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, বিসিজি টিকা নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষার ফলাফলের জন্য দেশগুলির অপেক্ষা করা উচিত। তাদের মতে, যেসব দেশে সার্বজনীন বিসিজি টিকা কর্মসূচি রয়েছে সেসব দেশের মোট তথ্যের বিশ্লেষণ না করে জনসংখ্যার ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করা উচিত।

দ্বিতীয়ত, জন্মের সময় দেয়া বিসিজি টিকার উপকারী প্রভাবগুলো কোভিড-১৯ এর মতো সংক্রামক ভাইরাসের সংক্রমণ হ্রাস নাও করতে পারে। এর একটি কারণ হলো বিসিজি টিকার উপকারী প্রভাবগুলো পরবর্তীতে দেয়া কোনো টিকার দ্বারা পরিবর্তিত হতে পারে।

তৃতীয়ত, বিসিজি টিকা অনেক আগে দেয়া থাকলেও এটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। ইতিমধ্যে জানা গেছে যে, কোভিড-১৯ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আঘাত করে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে গুরুতর আকার ধারণ করে রোগীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়।

চতুর্থত, বিসিজি টিকা কার্যকর না হলে মহামারির মধ্যে মানুষকে সুরক্ষার বিষয়ে একটি ভুল ধারণা প্রদান করবে এবং অবশেষে উপকারের প্রমাণ ছাড়াই ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে। যার ফলে, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর বাচ্চাদের যক্ষা থেকে বাঁচানোর এই টিকার সংকট দেখা দিতে পারে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031