স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ক্রসফায়ারের নামে কাউকে হত্যা করা হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন । বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্রসফায়ারের নামে কাউকেই হত্যা করছে না।’

শনিবার দুপুরে ঢাকার তেজগাঁও বিজি প্রেস মাঠে এক মাদকবিরোধী সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কেবল মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার করে গুলি ছুড়ছে, তখনই আত্মরক্ষার্থে গুলি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কাউকে হত্যার উদ্দেশ্যে নয়।’

দেশি এবং বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলো বরাবরই বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারকে বিচারবহির্ভুত হত্যা বলে অভিযোগ করে প্রতিটি ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে আসছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই ধরণের অভিযোগ অস্বীকার করে। আর এখন পর্যন্ত এ ধরণের ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদাহরণও বিরল।

সুশীল সমাজের অনেকেই সমালোচনা করছেন উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নাকি নিরাপরাধীদের ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করছে। এসব বলে কেবল সন্ত্রাসীদেরই উসকে দেওয়া হয়। এতে সন্ত্রাসীরা আরও পার পেয়ে যায়। তারা (সুশীল) কি দেখে না, মাদকে একটা দেশের যুবশক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছিল।’

প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় পদক্ষেপে মাদকের লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব যখন হিমশিম খাচ্ছিল তখন আমরা শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ভয়ঙ্কর জঙ্গিবাদকে নিয়ন্ত্রণ করেছি। যারা (জঙ্গিরা) বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে দেখানোর পাঁয়তারা করছিল।’

‘কারাগারের অধিকাংশই গ্রেপ্তার মাদকে’

মাদকের বিরুদ্ধে কঠিন সাজার ব্যবস্থা করে নতুন আইন করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই আইনের কঠোর প্রয়োগ হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন।’

‘আমাদের কারাগারে ধারণ ক্ষমতা ৩৫ হাজার। অথচ আছে ৯৫ হাজার কয়েদি। এদের অধিকাংশই মাদক সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তার। কঠোরতার কারণেই আজ মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক কারবারীদের জায়গা কারাগারে।’

জঙ্গিবাদের মতোই মাদকের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ শুরু হয়েছে। যারা ইয়াবা সেবন করেন তাদের মেধা বিলুপ্ত হয়। ৩/৪ বছর ইয়াবা হেরোইন সেবন করলে নিজের নামটাও ভুলে যাবার দশা হয়। একটা মানুষ যদি ২৪ ঘণ্টা জেগে থাকেন তাহলে তিনি কতোটা সুস্থ থাকবেন?’

‘কঠিন নির্দেশনার পরও মাদক আসছে’

সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই যেন মাদক না ঢোকে সে নির্দেশনা বিজিবিকে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিজিবিকে নির্দেশনা দিয়েছি কোনোভাবে যেন মাদক না ঢোকে। কোস্টগার্ডকে বলেছি উপকূলে নজরদারি রাখতে।’

‘এরপরেও মাদক আসছে। আমরা মাদক তৈরি করি না তবুও মাদক আসছে। মাদক আমাদের যে কী ক্ষতি করছি তা ঘরে ঘরে জানাতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে হবে। যুবকরা সীসা বারে যায়। হুক্কা টানে। আগুনে ইয়াবা গুড়া করে টানছে। সেজন্য আমরা সীসাবারও নিয়ন্ত্রণে এনেছি।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মোসাদ্দেক মো. আবুল কালাম, কাউন্সিলর মুন্সি কামরুজ্জামান কাজল, মনোচিকিৎসক মোহিত কামাল, মানসের অধ্যাপক অরুপ রতন চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031