৬৩ জন শিক্ষার্থীকে ছেড়েছে শাহবাগ থানা কোটাবিরোধী আন্দোলনের আটক। বুধবার রাত ৯টার পর তাদের ছাড়া হয় বলে জানান শাহবাগ মোড় থেকে আমাদের প্রতিনিধি। এ সময় সেখানে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীরা ভি চিহ্ন দেখানোর পাশাপাশি কোটাবিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন।
আটক ব্যক্তিদের সংখ্যাটি ঘটনাস্থলে থাকা আন্দোলনকারী ও সাংবাদিকরা নিশ্চিত করেছেন। তবে পুলিশ প্রশাসন থেকে এটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি। শাহবাগ থানার ওসির সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করলে তিনি অনেক ‘ঝামেলায়’ আছেন বলে জানান।
এদিকে আগামী ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় সারা দেশের শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জালন কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনের কো-অর্ডিনেটর ঢাবি ছাত্র রাশেদুল হক।
এর আগে আটক সহ-আন্দোলনকারীরা ছাড়া পাওয়ার পর তাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়। কাউকে কাউকে কাঁধে তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। এরপর তারা শাহবাগ মোড় ছেড়ে দিয়ে দক্ষিণ অংশে সরে যান।
আর বিপুল সংখ্যক পুলিশ আন্দোলনকারীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির দিকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।
এর আগে আটক শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে আনতে সন্ধ্যায় শাহবাগ থানা ঘেরাও করে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে রাত পৌনে নয়টার দিকে তারা শাহবাগ মোড়ের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান নেন। এ সময় মোড় সন্নিহিত সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঘটনাস্থল থেকে আমাদের প্রতিনিধি জানান, অন্তত ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী শাহবাগের মোড়ের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান নেন। মোড়ের কিছু দূরে পুলিশের গাড়ি দেখা গেছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা কমানোর দাবিতে আজ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ছিল আন্দোলনকারীদের। পুলিশ সেখান থেকে সোহরাব, জাহির ও আরিফ নামের তিনজনকে আটক করে। পরে তাদের ছাড়াতে গেলে আরো অন্তত ৬০ জন আটক হন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য স্থান থেকে শত শত শিক্ষার্থী থানা ঘেরাও করতে শাহবাগে জড়ো হন। তারা প্রথমে শাহবাগ মোড়ের দক্ষিণ অংশে অবস্থান নেন।
শাহবাগ থানার একটি সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদলকে থানায় ডেকে নিয়ে কথা বলেন পুলিশ কর্তৃপক্ষ। আন্দোলনকারীদের শাহবাগ ছেড়ে চলে যেতে বলা হয় তখন।
তবে শিক্ষার্থীরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তারা আটক শিক্ষার্থীদের না নিয়ে ফিরবেন না। অবশেষে আটক শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে আনলেন আন্দোলনকারীরা।
সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনাসহ পাঁচ দফা দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আজ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ছিল তাদের।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়িআজ বুধবার সকালে রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় জড়ো হন একদল শিক্ষার্থী। বেলা পৌনে ১১টার দিকে তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে মিছিল নিয়ে যাত্রা করে। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দোয়েল চত্বর হয়ে হাইকোর্ট মোড়ে গেলে আন্দোলনকারীদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় সেখানেই রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। পরে পুলিশ তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় আন্দোলনকারীরা। এ সময় দুই পক্ষে বেশ কিছু সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সোহরাব, জাহির ও আরিফ নামের তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে শাহবাগ থানা থেকে তাদের ছাড়াতে গিয়ে আটক হন আরও অন্তত ৬০ জন। এ তথ্য নিশ্চিত করেন রমনা জোনের ডিসি মারুফ সরদার।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত আছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য। এর বাইরে ১০ শতাংশ নারী কোটা, পশ্চাৎপদ জেলাগুলোর জন্য আরও ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য পাঁচ শতাংশ এবং এক শতাংশ কোটা আছে প্রতিবন্ধীদের জন্য।
এই ৫৬ শতাংশ কোটা কমিয়ে ১০ শতাংশে নিয়ে আসাসহ পাঁচ দফা দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আজ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ছিল তাদের।