করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে বাংলাদেশে । এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৭২ জনে। এছাড়া, এ সময়ে নতুন শনাক্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৮১ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৯ হাজার ৫৩৪ জনে। আর নতুন সুস্থ হয়েছেন ৮১৬ জন।

আজ সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১৩ হাজার ১০৪ জনের। রিপোর্ট পাওয়া গেছে ১১ হাজার ৪৩৯ জনের। এতে ২ হাজার ৩৮১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এর আগে গতকাল (৩১ মে) একদিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়, যা এক যাবতকালের রেকর্ড। গত ২৯ মে একদিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫২৩ জন, ২৮ মে দুপুর পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২৯ জন, ২৫ মে ১ হাজার ৯৭৫ জন, গত ২৩ মে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৭৩ জন, গত ২১ মে একদিনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭৭৩ জনের দেহে করোনা শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল। তার আগে ২০ মে শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ৬১৭ জনের। এ পর্যন্ত ৩ লাখ ২০ হাজার ৩৬৯ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৯ হাজার ৫৩৪ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২০.৪৩ শতাংশ।

এছাড়া এই সময়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ২২ জন। গতকালের চেয়ে আজ মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। গতকাল একদিনে সর্বোচ্চ ৪০ জন মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। তার গত ৩০ মে ২৮ জন মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। ২২ মে একদিনে সর্বোচ্চ ২৪ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এর আগে গত ১৮, ১৯ ও ২৫ মে একদিনে সর্বোচ্চ ২১ জন ও ২২ মে ২২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ৬৭২ জনের। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১.৩৮ শতাংশ। নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ১৯ জন ও নারী ৩ জন।

তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৮১৬ জন। এ নিয়ে মোট ১০ হাজার ৫১৬ জন সুস্থ হয়েছেন।

ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক নাসিমা বলেন, তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করবেন। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাবেন ও ফুসফুসের ব্যায়াম করবেন। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এটি ফুসফুসের কার্যকারীতা নষ্ট করে দেয়।

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর।

এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।

ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর গুরত্ব দেন ডাক্তার নাসিমা।

এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, গতকাল রবিবার সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত একদিনে বিশ্বে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখেরও বেশি। গতকাল সারাবিশ্বে এক লাখ ৬ হাজার ৬৪৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ২৯৪০ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ২৮ লাখ ৪৬ হাজার ৫২৭ জন।

আক্রান্ত ও নিহতের সংখ্যায় বরাবরের মতো সবার ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ লাখ ৩৭ হাজার ১৭০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ছয় হাজার ১৯৫ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৭ জন।

আক্রান্তের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসা ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৪৯ জন, মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৩১৩ জনের।

রাশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৫ হাজার ৮৪৩ জন, মৃত্যু হয়েছে ৪৬৯৩ জনের। স্পেনে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৮৬ হাজার ৫০৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ১২৭ জনের।

মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্রিটেনে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৮ হাজার ৪৮৯ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৭৪ হাজার ৭৬২ জন। এছাড়া ইতালিতে মারা গেছেন ৩৩ হাজার ৪১৫ জন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031