স্ত্রী শান্তা আক্তার (ছদ্মনাম) গুরুতর অসুস্থ স্বামীকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করেন । ভর্তির পরই কর্তব্যরত ডাক্তার শান্তাকে জানান তার স্বামীর শরীরে রক্ত প্রয়োজন। জরুরি রক্তের ব্যবস্থা করতে হবে। এরপরই শান্তা ছুটে যান হাসপাতালে দ্বিতীয় তলার ব্লাড ব্যাংকে। এই সময় সেখানে থাকা কয়েকজনের মধ্যে একজন রক্ত জোগাড় করে দেয়ার আশ্বাস দেন। পরে মিরপুর এলাকার মণিপুর পাড়ার একটি বাসায় নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন আশ্বাস দেয়া ওই ব্যক্তি। আর এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেন এক নারী। আটক করা হয়েছে তাদের দুজনকেই।

শনিবার বিকালে র‌্যাব থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাপারে জানানো হয়।

ঘটনার বিষয়ে র‌্যাব-২ এর উপ-অধিনায়ক মেজর এইচ এম পারভেজ আরেফিন বলেন, রক্ত জোগাড় করে দেওয়ার কথা বলে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে চলতি মাসের ১৫ তারিখে। ওই দিন বিকালে শান্তা আক্তারের (ছদ্মনাম) স্বামী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ভর্তি করেন। পরে দায়িত্বরত ডাক্তার তার স্বামীর জন্য রক্ত প্রয়োজন জানিয়ে জরুরিভাবে রক্তের ব্যবস্থা করার পরার্মশ দেন। তখন রক্তের সন্ধানে শান্তা হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ব্লাড ব্যাংকের সামনে গিয়ে ৩ থেকে ৪ জনকে দেখতে পান। তাদেরকে তার স্বামীর জন্য ‘ও’ পজিটিভ রক্তের প্রয়োজন জানালে তাদের মধ্যে ধর্ষক মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব রক্তের ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দেন। একদিন পরে তিনি নিজেই যোগাযোগ করেন।

 

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক শাখার কেউ না। তিনি নিজেও একজন চিকিৎসা প্রার্থী। তার মা একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরেরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে জানিয়ে মিরপুররে মধ্য মনিপুর পাড়ায় অবস্থিত শিফা ভিলার ভাড়াটিয়া মাশনু আরা বেগম ওরফে শিল্পীর বাসায় ওই গৃহবধূকে নিয়ে যান মনোয়ার। পরে শিল্পীর সহযোগিতায় মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব শান্তাকে ধষর্ণ করেন। এ সময় শান্তা সজিবের হাত থেকে বাঁচতে চিৎকার করেন। তখন তার গলা চেপে ধরে এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরে শান্তা লোকলজ্জার ভয় ও স্বামীর অসুস্থতার কারণে ধর্ষণের বিষয়টি গোপন রাখেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাটতার দিকে কল দিয়ে রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে জানিয়ে তার সঙ্গে আবার দেখা করতে বলেন মনোয়ার। তখন শান্তা ফের ধর্ষিত হওয়ার ভয়ে তার স্বামীকে ধষর্ণের বিষয়টি খুলে বলেন। পরে তারা দু’জনে র‌্যাব-২ এর কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করলে অভিযুক্তদের মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা র‌্যাবের কাছে মনোয়ার হোসেন সজীব ধর্ষণ ও মাশনু আরা বেগম ওরফে শিল্পী সহযোগিতার কথা স্বীকার করেছেন। তারা আরও জানান, মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীবের সঙ্গে শিল্পীর র্দীঘদিন ধরে অবৈধ সর্ম্পক রয়েছে। তারা একে অন্যকে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ কাজে সহযোগিতা করেছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031