হালিশহর নয়াবাজার এলাকায় নৈশপ্রহরী আজাদ খুনের মূল দুই পরিকল্পনাকারী ভারতে পালানোর আগেই ধরা পড়লো । তারা জানতো না খুনের ঘটনার পর থেকেই তাদের গতিবিধি নজরে রাখছিল গোয়েন্দা কর্মকর্তাগণ। গত রোববার বিকেলে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় খুলনার পাইকগাছা থানার শোলাদানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলো, আবুল হাসনাত রাজু (৩৪) ও মো. ওসমান (৩৫)। তাদের বাসা নগরীর হালিশহরের নয়াবাজার এলাকায়। তবে যার কারণে ঘটনার সূত্রপাত এবং যে প্রথম ছুরিকাঘাত করেছে, সেই টমি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ–কমিশনার (বন্দর ও পশ্চিম) আলী হোসেন আজাদীকে জানান, ওসমান ও রাজু হত্যাকাণ্ডের পর খুলনা পালিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে সাতক্ষীরা হয়ে তারা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এর আগেই তাদের খুলনার পাইকগাছা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রাজু ও ওসমানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা কর্মকর্তা আলী হোসেন বলেন, আজাদ ও তার ভাই মফিজের সঙ্গে টমি নামে এক যুবকের ঝগড়া হয়েছিল। টমি ফোন করে ফয়সাল নামে তাদের এক বন্ধুকে নিয়ে এসেছিল। চলে যাওয়ার সময় সে আজাদ ও তার ভাইকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে যায়। ভোরে টমি, ফাহিম, ওসমান ও রাজু মোটর সাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আজাদের সাথে বিতণ্ডায় জড়ায়। এরপর মোটরসাইকেল থেকে নেমে টমি আজাদকে প্রথম ছুরিকাঘাত করে। পরে ফাহিমসহ অন্যরা তাকে আঘাত করে।

তিনি বলেন, ঘটনার পর তারা টমির বাসায় গিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি ছোরা রেখে আসে এবং পরনের কাপড় পাল্টে সেগুলো ভিজিয়ে রাখে। আমরা টমির বাসা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা দুটি উদ্ধার করি। পলাতক টমিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত গত ২৮ মে ভোরে পাহাড়তলীর হালিশহর নয়াবাজার এলাকায় আজাদুর রহমান (৩০) নামে এক নৈশপ্রহরীকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। মৃত্যুর আগে স্বজনদের কাছে খুনীদের নাম বলে গিয়েছিলেন আজাদ। এর একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। ভিডিওতে দেখা যায়, আজাদের স্বজনরা তাকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় জিজ্ঞেস করছেন, ছুরিকাঘাত কারা করেছেন? এসময় আজাদ উত্তরে ওসমান ও রাজুর নাম প্রকাশ করেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আজাদের স্ত্রী নাজমা আক্তার বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলায় আসামি করা হয়–ওসমান, রাজীব, রাজু ও ফয়সালকে। মূলত যার কারণে ঘটনার সূত্রপাত এবং ছুরিকাঘাতও যে প্রথম করেছে, সেই টমির নাম মামলায় উল্লেখ করা হয় নি। পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে সে–ই নাটের গুরু।

ঘটনার পরদিন ২৯ মে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে নগরীর কদমতলী ও পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আবু তাহের রাজীব, দেলোয়ার হোসেন জয় ও রায়হান সজীবকে রাঙ্গামাটির একটি আবাসিক হোটেল থেকে এবং আবুল হাসনাত রানাকে চট্টগ্রামের কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তারা এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031