ক্রেতাদের উচ্চমূল্যেই কিনতে হচ্ছে সব ধরনের চাল। রোনা ভাইরাসের প্রভাবে রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে কয়েক দফা বেড়েছে চালের দাম। তাদের অভিযোগ, বাজারে চালের সরবরাহ কমিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দফায় দফায় দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রতারা। করোনা ভাইরাসের অজুহাতে বাজারে চালের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন তারা। এতে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, মিলাররা পরিবহন ও শ্রমিক সংকটের কারণ দেখিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল সরবরাহ করছে না। ফলে বাজারে চালের সংকট দেখা দিয়েছে। একই কারণ দেখিয়ে মিলাররাই চালের দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

আজ কাওরান বাজার ও হাতিরপুল কাঁচাবাজারের চাল ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, দেশের মানুষের মধ্যে যে করোনা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। সেই আতঙ্ককে পুঁজি করে মিলাররা চালের সরবরাহ কমিয়ে সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়েছেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে এখন মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৮ টাকা দরে। একই মানের নাজিরশাইলও কেজিপ্রতি একই দামে বিক্রি হচ্ছে। অথচ করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার আগে এই দুই ধরনের চাল বিক্রি হতো ৫২-৫৪ টাকা কেজি দরে। সরু চালের পাশাপাশি দাম বেড়েছে মোটা চালেরও। পাইজাম ও লতা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ৪২-৪৮ টাকা কেজি। আর স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়, যা আগে ছিল কেজিপ্রতি ৩২-৩৫ টাকা।

সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, দেশের কোথাও চালের সংকট নেই। এরপরও দোকানে চাল পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বেশি দাম চাল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

হাতিরপুল কাঁচাবাজারের চাল ব্যবসায়ী আবদুল মতিন বলেন, এখন নওগাঁ, জয়পুরহাট, নাটোর ও কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চাল আগের মতো আর আসছে না। যা আসছে তারও দাম বাড়ানো হয়েছে। তাই বেশি দাম দিয়েই কিনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, অথচ বাজারে অভিযান চালিয়ে আমাদেরই জরিমানা করা হয়।

কাওরান বাজারের বরিশাল রাইস এজেন্সির সত্ত্বাধিকারী রেজাউল করিম বলেন, দেশের চালের সবচেয়ে বড় মোকাম নওগাঁ ও কুষ্টিয়ায়। এই দুই মোকাম থেকে চাল আসা কমে গেলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে রাজধানীর চালের বাজারে। গত ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে নওগাঁ ও কুষ্টিয়া থেকে চালের স্বাভাবিক সরবরাহ আসছে না। এ কারণে রাজধানীতে চালের দাম বেড়েছে। এর পুরোপুরি দায় মিলারদের। সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশান না নিয়ে উল্টো আমাদেরকে জরিমানা করা হয়।

চাল ব্যবসায়ী আকবর হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর চাল কেনার এক ধরনের হিড়িক পড়ে যায়। এতে দেখতে দেখতে চালের দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। এখন চালের বিক্রি কমলেও দাম কমছে না। কারণ বড় বড় প্রতিষ্ঠানের চাল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ছোট কিছু প্রতিষ্ঠানের চাল পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে চাহিদা কমলেও চালের দাম বেড়ে গেছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031