যখন দেশে সুশাসন ও জবাবদিহির চরম অভাব হয়, তখনই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, সমস্যা সমাধানে সরকারের মনে হয় এই একটিই উপায় আছে। তা হচ্ছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’। এ জাতি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। গতকাল রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে ২৪টি নাগরিক সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন। ‘পরিবেশ আন্দোলনকর্মী উত্তম হত্যার বিচার, সড়কপথে পরিবহন নৈরাজ্য ও মানুষ হত্যা বন্ধের দাবিতে’ এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে সংগঠনগুলো।

২১শে  মে হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে বাসের ধাক্কার পর ট্রাকচাপায় নিহত হন পরিবেশ আন্দোলনকর্মী উত্তমকুমার দেবনাথ। সমাবেশে সুলতানা কামাল বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। এ দেশের মানুষ যেখানেই যাচ্ছে, মরিয়া হয়ে ছুটে যাচ্ছে। অন্যকে মাড়িয়ে কেন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এ অসুস্থ প্রতিযোগিতা? এর কারণ পুরো সমাজে অনাচার ঢুকে পড়েছে, যার খেসারত দিচ্ছি আমরা সবাই মিলে। সুলতানা কামাল বলেন, আমাদের দেশের মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই, সংবেদনশীলতা ভোঁতা হয়ে গেছে। যারা দেশ পরিচালনা করছেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে তাদের ভাবতে হবে। আমরা সচেতনতা সৃষ্টির জন্য দাঁড়িয়েছি। সমাবেশে বাপার সহ-সভাপতি রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ভুক্তভোগীদের কান্না নীতিনির্ধারকদের কানে পৌঁছায় না। আমরা তাদের দেশ পরিচালনার অর্থ জোগান দিচ্ছি, তারা আমাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এ দেশের মানুষকে সোচ্চার হতে হবে। সমাবেশে উত্তমের পরিবারের দায়িত্ব গ্রহণ ও ১৬টি দাবি জানিয়েছে ২৪টি সংগঠন। উত্তম দেবনাথ হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচার ও উত্তমের পরিবারের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩-এর যুগোপযোগী সংশোধনী আনা ও তা বাস্তবায়ন, পথচারী ও অযান্ত্রিক যানে নিরাপদে চলাচলের উপযোগী পরিবেশ তৈরি, উল্টোপথে গাড়ি চালানো বন্ধ করা, যথাযথভাবে বিদ্যমান সড়কপথ পরিচালনা ও মেরামত করা, ভুয়া লাইসেন্সধারী চালকদের নিষিদ্ধ ও শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করাসহ ১৬টি দাবি তুলেন ধরেন। সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা, বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন, যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হাবিব, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ প্রমুখ।
Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031