একদিনে মারা গেছেন ৪৭৫ জন ইতালিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। মহামারিটি ইতালিতে বিস্তার শুরুর পর থেকে এটাই একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা। এতে মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩০০০ জনে পৌঁছেছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে লম্বার্দি অঞ্চলে। কেবল সেখানেই একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন ৩১৯ জন। মঙ্গলবারের পর থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব মৃত্যু হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, সবমিলিয়ে ইতালিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪ হাজারের বেশি।

বর্তমানে চীনের পর করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের দেশ ইতালি। এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে বিশ্বজুড়ে মারা গেছেন অন্তত ৮ হাজার ৭৫৮ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখের বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, এর মধ্যে ৮০ শতাংশই আক্রান্ত হয়েছেন ইউরোপ, পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশে দেশে মরিয়া পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। সামাজিকভাবে দূরত্ব বৃদ্ধিতে জোর দেয়া হচ্ছে, বড় ধরনের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস ঘেব্রিয়েসুস বুধবার বলেছেন, ভাইরাসটি দমন ও নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন আইসোলেশন, পরীক্ষা, চিকিৎসা ও শনাক্তকরণ।
করোনার সংক্রমণরোধে গত দুই সপ্তাহ থেকে লকডাউনে রয়েছে ইতালি। জনগণকে ঘর থেকে বের না হতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে তাতে থামছে না মৃত্যুর মিছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাইক রায়ান জানান, সম্ভবত দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভেতরে বিপুল সংখ্যক  আক্রান্ত হওয়ার কারণে এমনটা হচ্ছে। পাশাপাশি দেশটিতে বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি থাকায়ও।
টেড্রস জানিয়েছেন, ভাইরাসটির টিকার পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবে তা সত্যিকারে কার্যকরী কিনা তা বুঝতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
জর্জরিত ইউরোপ
করোনা ভাইরাস প্রথম ধরা পড়ে গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে। সেখান থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত দেড়শ’র বেশি দেশ ও অঞ্চলে এর বিস্তার ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটে চীনে। সেখানে মারা যায় ৩ হাজারের বেশি মানুষ। তবে এখন ভাইরাসটির প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে ইউরোপ।
স্পেনে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৭১৬ জন। মারা গেছেন ৫৯৮ জন। ফ্রান্সে মঙ্গলবার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৭৩০ জন। মারা গেছেন ২৬৪ জন। এর মধ্যে মঙ্গলবারের পর থেকে মারা গেছেন ৮৯ জন। বৃটেনে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬২৬ জন। মারা গেছেন ১০৪ জন। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন শুক্রবার থেকে সকল স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া, লন্ডন লকডাউন করে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সেখানে মোতায়েন করা হতে পারে ২০ হাজার সেনা সদস্য। ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে কম মৃত্যু হয়েছে জার্মানিতে। সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজারের বেশি মানুষ। মারা গেছেন ১২ জন। অন্যদিকে, বেলজিয়ামে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৮৬ জন। মারা গেছেন ১৪ জন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031