প্রশাসন দীর্ঘ ৫ মাস বন্ধ থাকার পর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে জাহাজ চলাচলের আনুমতি দিয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটকবাহী প্রমোদ তরনী কেয়ারী সিন্দাবাদ, কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন ও বে-ক্রুজ চলাচল করতে পারবে। গত মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) কিছু শর্ত সাপেক্ষে এসব জাহাজকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে চলাচলের অনুমোদন দেয় জেলা প্রশাসন।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, সাগর উত্তাল ও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এতদিন সেন্টমার্টিনগামী জাহাজসমূহকে অনুমোদন দেয়া হয়নি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভাষ্য মতে এখন সাগর সাগর শান্ত। তাই জাহাজ চলাচলের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।

তবে, ফিটনেস লাইসেন্স সাথে থাকা, অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই না করা, সমুদ্রে জাহাজ চলাচল ও আবহাওয়া অনকূলে থাকাসহ এসব জাহাজকে কিছু শর্ত বেঁধে দেয়া হয়েছে। যদি শর্ত লঙ্গন করে তাহলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের শাস্তি দেয়া হবে।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারী অভিজাত প্রমোদ তরনী কেয়ারী ট্যুরস এন্ড সার্ভিস লিমিটেড এর কক্সবাজার অফিস ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির জানান, শর্তসাপেক্ষে আমাদের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সেন্টমার্টিনগামী অনেক পর্যটন টিকিট বুকিং দিয়েছে। আমরাও প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রশাসনের নির্দেশিকা মেনেই জাহাজ পরিচালনা করা হবে। বৃহস্পতিবার থেকে জাহাজ ছাড়বে।

বে-ক্রুজ এর ব্যবসা উন্নয়ন কর্মকর্তা আসাফ-উদ-দৌল্লাহ আশেক জানান, আমরা অনুমতি পেয়েছি। শুক্রবার থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে আমাদের জাহাজ ছাড়বে।

এদিকে গত দুই ঈদের ভর মৌসুমেও টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচলে অনুমতি না পাওয়ার খবরে অনেক পর্যটন কক্সবাজারে আসেনি। যারা এসেছিলেন এদের মধ্যেও অনেকে সেন্টমার্টিন যেতে না পেরে ভ্রমন বাতিল করে কক্সবাজার ছাড়েন। এতেকরে পর্যটন শিল্পে ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে, জেলা প্রশাসকের মতে এসময় সাগরে নি¤œচাপের সম্ভাবনা ছিল। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় অনুমতি দেয়া হয়নি।

পর্যটন ব্যবসায়ীদের অভিমত, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে জাহাজ চলাচল করতে না পারায় গত মাস মাসে পর্যটন খাতে অন্তত পাঁচ কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে জেলাবাসী। পর্যটক শুন্যতায় খালি পড়েছিল সেন্টমার্টিনের অধিকাংশ হোটেল-রেস্তুঁরা। আয় রোজগার থেমে গিয়েছিল দ্বীপবাসির। পাশাপাশি রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকারও। দীর্ঘ পাঁচ মাস পরে হলেও সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমোদন পাওয়ার খবরে খুশি হয়েছে সেন্টমার্টিনবাসী।

দ্বীপের বাসিন্দা ছিদ্দিকুর রহমান জানান, সেন্টমার্টিনের অধিকাংশ মানুষের জীবন জীবিকা পর্যটকের ওপর নির্ভরশীল। পর্যটক না আসলে দ্বীপের মানুষের আয় রোজগার দুরুহ হয়ে পড়ে। কাঠের বোটে করে জীবন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।

ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টুয়াক) কক্সবাজার এর সভাপতি এম. রেজাউল করিম রেজা জানান, গত মে মাস থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিনগামী কোন পর্যটক কক্সবাজারে আসেনি। এখন অনুমোদনের খবর পাওয়ার পর থেকে পর্যটক আসা শুরু হয়েছে। এতেকরে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিনের পর্যটন ব্যবসা যেমন লাভবান হবে তেমনি সরকারের প্রচুর রাজস্ব আয় হবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031