জিকা ভাইরাস নিয়ে আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। নয় মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা তুলে নিলেও মশা বাহিত এই রোগকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং স্থায়ী প্রভাব বিস্তারকারী হুমকি বলেই বর্ণনা করছে সংস্থাটি। তবে বিশ্বের বেশ কিছু দেশে এখনও এই রোগের প্রাদুর্ভাব আছে।

আমেরিকা মহাদেশে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর জরুরি অবস্থা জারি করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় নয় মাস পর সেই আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থা উঠিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ড্যানিয়েল ইপস্টেইন বলছেন, ‘এখনও অন্তত ৭৫টি দেশে এটি আবারও মহামারী আকারে ছড়িয়ে পরতে পারে- যদি না সেখানে মশা নিধনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

জিকা ভাইরাস প্রতিরোধের কর্মসূচিগুলোও অব্যাহত রাখা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবীয় এলাকা এবং এর আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন জিকা সংক্রমণ রোধে দীর্ঘস্থায়ী পন্থা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

এডিস প্রজাতির মশা থেকে জিকা ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়িয়ে থাকে। জ্বর, জয়েন্ট পেইনসহ ছোটখাটো কিছু শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয় এ ভাইরাসের কারণে। আবার তা এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে সেরেও যায়। তবে বিপত্তি তৈরি হয় গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে। গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মাইক্রোফেলাসি তথা বিকৃত ও ছোট মাথা নিয়ে জন্ম নিতে পারে শিশু। এসব শিশুর বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি থাকে, শারীরিক বৃদ্ধি কম হয় এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

জিকা ভাইরাস সর্বপ্রথম ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় রেসাস ম্যাকাক নামের বানরের দেহে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে উগান্ডা ও তানজানিয়াতে মানবদেহে প্রথমবারের মতো ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ব্রাজিলে ব্যাপক আকারে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। ব্রাজিলে গত অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ১১১৩ জন মাইক্রোসেফালি আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ব্রাজিলের পর ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশসহ যুক্তরাষ্ট্রেও শনাক্ত হয়েছে জিকা। তবে সিডিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে যারা জিকা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন তারা জিকাপ্রবণ দেশ ভ্রমণ করে এসেছিলেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031