একটি শর্ত জুড়ে একাত্তরের ১৬ই ডিসেম্বর এইদিনে জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণ করতে সম্মত হন। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তিনি আত্মসমর্পণ করবেন না। খবরটি যখন দিল্লির মাধ্যমে থিয়েটার রোডে পৌঁছায় তখন আমরা ভীষণভাবে মর্মাহত হই। তা সত্ত্বেও আত্মসমর্পণ করানোটি আমাদের কাছে বড় হয়ে দেখা দেয়। নইলে আকাশ, স্থল, ও জলপথে যে সর্বাত্মক আক্রমণ ভারতীয় বাহিনী করত তাতে বাংলাদেশ ভস্মীভূত হয়ে যেত, ঢাকায়ও ছাই ছাড়া আর কিছুরই অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যেত না। কারণ, আমি স্বচক্ষে তাদের প্রস্ততির অনেকটা সাক্ষ্য বহন করি। সেইজন্য তাদের এই অকারণ জেদকে মেনে নিতে আমরা বাধ্য হই। এ-খবরে জেনারেল এমএজি ওসমানীর সর্বপ্রকার প্রস্ততির মহাযজ্ঞ নিমেষে নিঃশেষ হয়ে যায়।

তিনি পোশাক, ব্যাজ, মেডেল পরে একরকম রিহার্সেল পর্যন্ত দিয়েছিলেন। হেলিকপ্টার প্রস্তত ছিলই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব উলটপালট হয়ে গেল। তিনি মানেকশর সহপাঠী ছিলেন স্যান্ডার্সে। সেখানে তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ না করলে তাঁর উপস্থিত থাকা বেমানান বিধায় তিনি বাধ্য হয়ে বিরত থাকেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন এ কে খন্দকার। তবে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় যে, এ কে খন্দকার তখনও সেকেন্ড-ইন কমান্ড ছিলেন না। সিলেটের জেনারেল রব সেকেন্ড-ইন কমান্ড ছিলেন। সে যা-ই হোক আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানটি সফলভাবে ১৬ই ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হলেও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, রাজাকার, আলবদর, আল শামস সশস্ত্র অবস্থায় ধানের মধ্যে আগাছার মতো বিস্তীর্ণ বাংলাদেশে রয়েই গেল।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031