‘বন্দীদেরকে কেবল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হবে-এ কথা জেলকোডে নেই বেগম খালেদা জিয়াকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবের পরদিন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, তার নেত্রীর পছন্দের হাসপাতালে যেতে দেয়ার বিলম্বের অর্থ তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে গত ৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে আনা হয় রোগ পরীক্ষার জন্য। ১০ জুন তাকে আবারও এখানে আনার প্রস্তুতি নেয়া হয়।

কিন্তু খালেদা জিয়া এই হাসপাতালে আসতে চাইছেন না। তিনি বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেডে যেতে চান।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে না আসার বিষয়ে অটল খালেদা জিয়াকে ১২ জুন বিকল্প প্রস্তাব দেয় সরকার। জানানো হয়, বিএনপি নেত্রী চাইলে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হবে।

কিন্তু ২৪ ঘণ্টায়ও কোনো সিদ্ধান্ত দেননি বিএনপি নেত্রী আর এ কারণে সরকারও কোনো উদ্যোগ নিতে পারছে না।

বুধবার রাজধানীতে  বিএনপি জোটের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ইফতারে যোগ দিয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ফখরুল। সিএমএইচে যাওয়ার বিষয়ে সরাসরি কিছু না বলে দলের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জেলকোডে কোথাও বলা নেই শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া যাবে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে এবং আমাদের দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে চিকিৎসার ব্যয় আমরা বহন করব।’

‘এরপরও তার চিকিৎসায় বিলম্ব করার অর্থই হচ্ছে তার (খালেদা জিয়া) জীবনকে হুমকির সম্মুখীন করা। তাই আমরা দাবি করব, অবিলম্বে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।’

খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নিস্পত্তিতে ইচ্ছাকৃত বিলম্বের অভিযোগও আনেন ফখরুল। বলেন, ‘সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপ হচ্ছে খালেদা জিয়াকে জনগণের কাছে আসতে দেয়া না যায়।’

‘উদ্দেশ্য একটাই, তাকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া। আসন্ন নির্বাচনে তিনি যাতে অংশ নিতে না পারেন সেই চক্রান্ত তারা করছে।’

খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মুক্ত করে আনার কথাও বলেন ফখরুল।

সরকারকে দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘রাষ্ট্রের স্তম্ভগুলোকে একে একে ধ্বংস করে দিয়েছে। পুলিশ, প্রশাসনকে তারা দলীয়করণ করছে। গুম, খুন, গ্রেপ্তার করার মাধ্যমে গোটা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

‘স্বাধীন দেশে পাখির মত মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। কোনো জবাবদিহিতা নেই। এসব বন্ধ করতে হবে। না হলে এর দায় আপনাদেরকে একদিন দিতে হবে’-সরকারকে সতর্ক করে বলেন বিএনপি নেতা।

খালেদা জিয়া দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক আখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘দেশের মানুষের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে সেই স্বাধীনতা বিকিয়ে দিতে কেউ ষড়যন্ত্র করতে পারবে না বলে বিশ্বাস করি।’

ইফতারে খালেদা জিয়ার মুক্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও এ সময় বক্তব্য রাখেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031