বোনের অসুখ ধরা পড়ে ২০০৪ সালে । পরে জানা যায় হৃদযন্ত্রে পানি জমেছে তার। সে সময় সারা কলকাতায় দৌঁড়াদৌঁড়ি করেও তেমন কোনো চিকিৎসা পাননি। শেষ পর্যন্ত বোনকে বাচাঁতে পারেননি পেশায় ট্যাক্সি চালক সহিদুল লস্কর।
বোন হারানোর সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে সংকল্প করেন নিজের গ্রামের হাসপাতাল গড়ে তুলবেন তিনি। এরপর ট্যাক্সি চালিয়ে অল্প অল্প করে জমানো টাকায় গত ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার বারুইপুরের পুঁড়ি গ্রামে চারতলা হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শুরু করেন তিনি। বোনের নামে হাসপাতালের নাম রাখেন ‘মারুফা মেমোরিয়াল হাসপাতাল’। এপ্রিলের মধ্যে সেখানে বহির্বিভাগে পরিষেবা শুরু করে দেওয়া যাবে বলে আশা করছেন সহিদুল। খবর আনন্দবাজারের।
নিজের জমানো টাকা, তিনটে ট্যাক্সি, সোনারপুরে চার কাঠা জমি এবং স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে কাজে নেমেছেন অষ্টম শ্রেণি পাশ সহিদুল। এ কাজে পাশে দাঁড়িয়েছেন তার স্ত্রীও।
সহিদুল বলেন, ‘আমি আর আমার স্ত্রী শামিমা দু’জনেই জানি যে, আমরা কিছু আনিনি। কিছু নিয়েও যাব না।’
৫০ শয্যার হাসপাতালের পাশাপাশি মোবাইল পরিষেবার মাধ্যমে প্রবীণদের কাছে চিকিৎসা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনাও শুরু করেছেন তিনি।
তার এ অনুপ্রেরণামূলক কাজের কথা শুনেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। তিনি সম্প্রতি রেডিও অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’ এ সহিদুলের কাজের প্রশংসা করেছেন। মোদি বলেন, ‘সহিদুল কলকাতার কাছে পুঁড়ি গ্রামে একটি হাসপাতাল তৈরি করছেন। এটাই নতুন ভারতের শক্তি।’
প্রধানমন্ত্রীর মুখে নিজের কাজের প্রশংসা শুনে সহিদুল বলেন, ভাল খবর। আমি আমার কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে যখন বিষয়টি পৌঁছেছে, তখন চাইব, তিনিও আমাদের পাশে দাঁড়ান। এক জন ক্ষুদ্র নাগরিকের ক্ষমতা আর কতটুকু! কেন্দ্রীয় সরকার পাশে দাঁড়ালে আরও অনেক বেশি মানুষকে পরিষেবা দেওয়া যাবে।
