আওয়ামী লীগ নেতা শামীম আহমদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে পরিবেশ ধ্বংস করার দায়ে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের আলোচিত । মঙ্গলবার রাতে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পারভেজ আহমদ ২২ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। এদিকে- মামলা দায়েরের ঘটনায় হঠাৎ করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোম্পানীগঞ্জের পরিস্থিতি। বদলে গেছে দৃশ্যপটও। গতকাল দিনভর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা কোম্পানীগঞ্জের পাথর অধ্যুষিত এলাকার ৫টি স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছে। দ্রুত মামলা প্রত্যাহার না করলে তারা কোম্পানীগঞ্জে যান চলাচল করতে দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে।
অবরোধের কারণে গতকাল দিনভর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে কোম্পানীগঞ্জ। অচল হয়ে পড়ে কোয়ারি এলাকা। ব্যারিকেডের কারণে যানবাহন চলাচল করেনি। এদিকে, মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আজ কোম্পানীগঞ্জে পাথর ব্যবসায়ী, শ্রমিকসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে। কোম্পানীগঞ্জে অবাধে পাথর উত্তোলনের ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এই অবস্থায় পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের একটি টিম সোমবার কোম্পানীগঞ্জ পরিদর্শন করে। এ সময় তারা কোম্পানীগঞ্জের শারপিন টিলা, ভোলাগঞ্জ, কালাইরাগ, উৎমাসহ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করে। সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পারভেজ আহমদ মানবজমিনকে জানিয়েছেন- তারা কোম্পানীগঞ্জ পরিদর্শনের পর বিভিন্ন স্থানে পরিবেশ ধ্বংসের চিহ্ন পান। এর প্রেক্ষিতে সোমবারই তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় মহা-পরিচালকের কাছে মামলার অনুমতি চান। মঙ্গলবার তারা মামলার অনুমতি পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এজাহার দাখিল করলে মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। এখন মামলাটির তদন্ত করবে পরিবেশ অধিদপ্তরের অন্য কর্মকর্তা। এরপর আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের দাখিল করা মামলার আসামিরা হলেন- শামীম মিয়া, বিলাল আহমদ, গরিব উল্লাহ, করিম উল্লাহ, আতাউর রহমান, শাহাব উদ্দিন, আমির উদ্দিন, আইয়ুব আলী, আঞ্জু মিয়া, মো. ইলিয়াস আলী, মো. কেফায়েত উল্লাহ, মাহমুদ হোসেন ওরফে মছন হাজী, বশর মিয়া, কালা মিয়া, আব্দুল হান্নান, মানিক মিয়া, আলী নূর, মামুন চৌধুরী, কাওছার আহমদ, নুরুল আমীন, লতিফ ও শায়েস্তা মিয়া। কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আবুল লেইছ জানিয়েছেন- পরিবেশ অধিদপ্তর তদন্ত করে এই মামলা করেছে। এর আগে কোম্পানীগঞ্জ প্রশাসনও পাথর লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। ৩১টি মেশিন তারা অভিযান চালিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছেন। এখন শারপিন টিলা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। কেউ আর শারপিন টিলায় ঢুকতে পারছে না। এদিকে, মামলার খবর গতকাল সকালে ছড়িয়ে পড়লে গোটা উপজেলার কোয়ারি এলাকাগুলোতে ক্ষোভ দেখা দেয়। পাশাপাশি কয়েকজন চুনাপাথর আমদানিকারক সমিতির নেতাকেও আসামি করায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়। এই ক্ষোভের কারণে সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হতে থাকে। মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, পাথর ব্যবসায়ী, শ্রমিক, বারকি শ্রমিকরাও এ বিক্ষোভে অংশ নেয়। তাদের দাবি- মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া।