গত ৪৮ ঘণ্টায় ৩০টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জোসেফ বাইডেন । সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রবীণ এক  সহযোগী নাম না নেয়ার শর্তে নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, বাইডেন যে গতিতে কাজ করছেন আগামী সোমবারের সূর্য  ওঠার আগেই ট্রাম্প যা করেছিলেন তার সব শেষ হয়ে যাবে। কেবল বিচারিক নিয়োগ ব্যতিত। বাইডেন স্বাক্ষরিত এইসব নির্বাহী আদেশের মধ্যে ১০ টি ডিক্রিই সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে জনস্বার্থে নেয়া হয়েছে।  ট্রাম্প তার চার বছরের বেশিরভাগ নীতির প্রয়োগ করেছেন নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে।
ক্ষমতা নিয়েই ৭৮ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঝড়ের গতিতে মনোযোগ দিয়েছেন কাজে। বুধবার সন্ধ্যায় ওভাল অফিসে বসেই শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত তিনি যে সকল গুরত্বপূর্ণ ডিক্রি জারি করেছেন তার মধ্যে রয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে পুনরায় অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি প্রদান, প্যারিস জলবায়ু প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন, মুসলিম দেশগুলোর ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ বন্ধ, কীষ্টোন এক্স এল পাইপ লাইন পুনর্বিবেচনা , সরকারের সকল স্হাপনায় মাস্ক ব্যবহার, অতিমারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা,  অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, বির্পযস্ত আমেরিকানদের খাদ্য
সহায়তা বাড়ানো ও বাড়ি থেকে উচ্ছেদ স্হগিত রাখা উল্লেখযোগ্য।

এইসব আমেরিকার স্বার্থ পরিপন্থী নীতি ছিল সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একরোখা মনোভাবের ফসল।  বাইডেন যা একে একে ঝেড়ে ফেলছেন। ট্রাম্প প্রথম থেকেই নানা অজুহাত তুলে ইমিগ্রেশনের উপর খড়গ হস্ত হয়ে ওঠেন। তার উগ্র শেতাঙ্গবাদী গৌষ্ঠীকে খুশী  করতে নিয়মিত ইমিগ্রেশন বন্ধ সহ অভিবাসীর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের পথ রুদ্ধ করতে চালান নানা অপতৎপরতা।

অতিমারি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ না নিলেও করোনাকে ঠিকই  ব্যবহার করেন ইমিগ্রেশনের ক্ষেত্রে। অতিমারি কোভিডের ভয়াবহতা ঢেকে রাখতে প্রয়াস চালান শুরু থেকেই। তার অর্থনৈতিক সাফল্য ম্লান হওয়ার আশঙ্কায় অতিমারিকে সামান্য ফ্লু বলে মন্তব্য করেন। লকডাউনের বিরোধীতা করে রাজ্যের গভর্নরদের সাথে প্রকাশ্য বিতন্ডায় জড়ান। অনেককে দেন নানা হুমকি-ধমকি। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের কোন পরামর্শ কানে তুলেন নি। নিজে মাস্ক পরতে অস্বীকার করেন। করোনায় দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর সময় হোয়াইট হাউসের অতিমারির জন্য গঠিত টাক্সফোর্সের সভায় যোগ দেন নি মাসের পর মাস। এসময় নিজের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। অথচ আমেরিকায় অতিমারি শুরু হওয়ার আগেই অতি গোপনীয় রাষ্ট্রীয় ব্রিফিংয়ে গোয়েন্দারা তাকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। সময় মতো ব্যবস্থা নিলে যুক্তরাষ্ট্রের জানমালের ক্ষতি বহুলাংশে কমানো যেতো বলে অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করেন।করোনা মহামারীতে আমেরিকাওয়াই এখন পর্যন্ত মারা গেছেন, ৪ লাখ ১৮ হাজার ৯৩ জন। আক্রান্তের সংখ্যা  ২ কোটি ৬৭ লাখ ৮ হাজার ২৩ জন। যা গোটা বিশ্বে একক দেশ হিসাবে সর্বোচ্চ। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্ষমতা নিয়েই করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি নিজে তার বক্তব্যে এটিকে যুদ্ধের সাথে তুলনা করেছেন। তার প্রশাসন ডাঃ অ্যান্থনি ফাউসির নেতৃত্বে এই মহামারীর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। বাইডেন প্রসাশন তার প্রথম ১শ দিনে ১শ মিলিয়ন ভ্যাকসিন আমেরিকানদের মাঝে প্রয়োগের কর্মসূচি সামনে রেখে অগ্রসর হচ্ছে।
Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031