আজ রোববারও টিকিটপ্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের আগাম টিকিট কিনতে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে । এদিন সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিতরণ শুরুর কথা থাকলেও গতকাল শনিবার থেকেই স্টেশনে অবস্থান নিয়েছেন হাজারো টিকিটপ্রত্যাশী। এর মধ্যে একটি অংশ রয়েছেন, যারা প্রথম দিন লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট পাননি।

এদিকে, কমলাপুর রেলস্টেশনে অতিরিক্ত ভিড় ও ভ্যাপসা গরমে টিকিটপ্রত্যাশীদের ভোগান্তি চরমে। সেইসঙ্গে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও টিকিট পাওয়া নিয়ে শঙ্কা অনেকের। অনলাইনে টিকিট না পেয়ে সরাসরি কাউন্টারেই আসছেন বেশির ভাগ মানুষ। তারপরও তাদের কাছে টিকিট যেন সোনার হরিণ।

টিকিটপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকেই গতকাল রাত থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন টিকিটের জন্য। কেউ বা মধ্যরাত থেকে দাঁড়িয়ে আছেন। কাউন্টারের সামনের অংশ কাণায় কাণায় পূর্ণ। এভাবে দিনরাত টানা অপেক্ষায় নাজেহাল যাত্রীরা। অবশ্য সময় পার করতে তাদের কেউ পত্রিকা পড়ছেন, শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ বই বা নোট নিয়ে লাইনে বসেই পড়ছেন। অনেকে আবার অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়েও পড়ছেন।

জানতে চাইলে যাত্রাবাড়ী থেকে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‌‌‌‘ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাবো। সকালে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। আগামীকাল সকালে ট্রেনের টিকিট ছাড়বে। এত সময় শুধু দাঁড়িয়ে বা বসে পার হয় না। তাই সময় কাটাতে পত্রিকা পড়ছি।’

গাইবান্ধা যাওয়ার জন্য সকালে এসে লাইনে দাঁড়ানো শাকিল বলেন, ‘মাকে নিয়ে ঈদ করতে বাড়ি যাবো। টিকিট কাটতে এসে দেখি লম্বা লাইন। আবার কালকের টিকিটের জন্য আজকেই লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। তাই রাতটা পার করতে কয়েকজন মিলে গেমস খেলছি।’

শুধু খেলা নয়, অনেকে পত্রিকা পড়া বা বই ও নোট খাতা পড়ে সময় পার করছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। অনলাইন ওয়েবসাইট কিংবা ‘রেল সেবা’ অ্যাপ কাজ না করায় টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ অনেকের। তাই কাজ ফেলে বাধ্য হয়ে স্টেশনে বসে আসছেন বলে জানান যাত্রীদের অনেকে।

এদিকে, টিকিট বিক্রির প্রথমদিন (শুক্রবার) কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শন করেছিলেন রেল মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। দ্বিতীয় দিন এসেছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। শান্তিপূর্ণভাবে টিকিট বিতরণ নিশ্চিত করতেই কাজ করছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও আনসার সদস্যরা। আর কালোবাজারে টিকিট বিক্রি বন্ধে পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে র‍্যাবের উপস্থিতি।

শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ১ জুলাই দেওয়া হয় ৫ জুলাই এর ট্রেনের টিকিট, ২ জুলাই দেওয়া হয় ৬ জুলাইয়ের টিকিট, আজ ৩ জুলাই দেওয়া হচ্ছে ৭ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট, ৪ জুলাই দেওয়া হবে ৮ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট এবং ৫ জুলাই দেওয়া হবে ৯ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট।

এ ছাড়া ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৭ জুলাই থেকে। ওই দিন ১১ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে। ৮ জুলাই ১২ জুলাইয়ের টিকিট, ৯ জুলাই ১৩ জুলাইয়ের টিকিট, ১১ জুলাই ১৪ এবং ১৫ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে।তবে ১২ জুলাই থেকে সব ট্রেন চলাচল করবে। এর মধ্যে ১০ জুলাই ঈদ হলে ১১ জুলাই সীমিত কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031