সড়কটি কার্পেটিং করার জন্য সড়কের পুরনো ইট তুলে ফেলা হয় প্রায় এক মাস আগে কক্সবাজারের রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনা টিলাপাড়া–সওদাগর পাড়া । কিন্তু ইট তুলেই ঠিকাদার লাপাত্তা। বর্তমানে সড়কটিতে যান চলাচল তো বন্ধই, বৃষ্টির পানি জমে থাকায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ১০ গ্রামের অন্তত হাজারো মানুষ।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানান, কয়েকমাস আগে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনা টিলাপাড়া হয়ে সওদাগর পাড়া পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং কাজ শুরু হয়। সংস্কার কাজের শুরুতে পুরুনো ইট ও মাটি তুলে সড়কটি খনন করা হয়। এরপর কাজ বন্ধ হয়ে গেলে বৃষ্টিতে সড়কটিতে হাঁটু সমান পানি জমে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষ, স্কুল–কলেজ, মাদ্রাসাগামী ছাত্রছাত্রী দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম জানান, একবছর আগে সড়কটির এক কিলোমিটার সংস্কার (কার্পেটিং) কাজের দায়িত্ব পান উখিয়া উপজেলার বাসিন্দা মো. শাহজাহান নামে এক ঠিকাদার। তিনি পুরো শুষ্ক মৌসুম চলে গেলেও কাজ শুরু করেননি। একমাস আগে বর্ষায় এসে কাজ শুরু করলেও বর্তমানে সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, সড়কজুড়ে এখন অসংখ্য গর্ত। সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে যাচ্ছে। কোনো যানবাহন চলতে পারছে না। এমনকি সড়কটি কাঁদাময় হয়ে যাওয়ায় মানুষের চলাচলও বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, আমার জানা মতে, উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর এ কাজের টেন্ডার বাতিল করে ঠিকাদারকে চিঠি দেন। পরে ওই ঠিকাদার জেলা এলজিইডি অফিসে তদবির করে চলতি বর্ষা মৌসুমে কাজ শুরু করেন।

উখিয়ারঘোনা সাইমুম সরওয়ার কমল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সম্প্রতি উখিয়ারঘোনা সড়কের এই এক কিলোমিটার সড়কের কাজ শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কয়েকমাস পূর্বে কাজ শুরু করে পরে বন্ধ করে দেন। তিনি বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়ের শত শত ছাত্রছাত্রী যাতায়াতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে হাঁটু পানি জমে যাচ্ছে। ফলে দূর–দূরান্তের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার কাজ শেষ করার জন্য সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

এদিকে সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ওই সড়কে চলাচলকারী শতাধিক অটোরিক্সা, ইজিবাইক (টমটম) চালক। এ কারণে জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন বলেও জানান একাধিক অটোরিক্সা ও টমটম চালক। তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ঠিকাদার মো. শাহজাহানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

রামু উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী মঞ্জুর হাসান ভূঁইয়া জানান, কাজটি শুরু করার সময় কয়েকজন ইটভাটা মালিক বাধা দেন। এ কারণে যথাসময়ে কাজ শুরু করা যায়নি। তাছাড়া কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বর্ষার মধ্যে তাকে কাজ শেষ করতে তাগাদা দেওয়া হয়। কিন্তু কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় ফেলে রাখার কারণে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রথমেই সড়কে ইটের খোয়া ফেলে দিতে পারলে গাড়ি চলাচল সম্ভব হতো। এখন বালি আর বৃষ্টি পানির কারণে সড়কটি বেশ কাদাময় হয়ে গেছে। সরেজমিন পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031