হাসপাতালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণার পর দাফনের আগে কেঁদে ওঠা শিশুটি গালিবাতুল হায়াতকে (মৃত্যুঞ্জয়) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে। নাম না জানা একজন এই চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়েছেন। শনিবার বিকালে একটি বেসরকারি কোম্পানির হেলিকপ্টারে করে শিশুটিকে রাজধানীতে নিয়ে পাঠানো হয়। তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হবে।
শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তার স্বজনদের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় তারা সেই উদ্যোগ নিতে পারেননি। এরপর এগিয়ে আসেন এক দানশীল ব্যক্তি।
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ খোন্দকার মো. আবদুল্লাহ হিস সায়াদ বলেন, ‘বাচ্চাটি ২৪ সপ্তাহে ডেলিভারী হওয়ায় তার ওজন সাতশ গ্রাম । এই কারণে তার জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে ভাল পরিচর্যা পেলে সুফল পাওয়া যেতে পারে।’
শহরের কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হুদা ও নাজনীন আক্তার দম্পতির প্রথম সন্তান এই শিশুটি। আগামী জানুয়ারিতে শিশুটির ভূমিষ্ঠ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ের আগেই তার জন্মগ্রহণ এবং এর পরের ঘটনাপ্রবাহ তোলপাড় তুলে সারা দেশেই। শিশুটির চিকিৎসার জন্য গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড।
শিশুটির দাদা আবুল কালাম মিয়া জানান, শনিবার দুপুরের ঢাকার এক নাম প্রকাশ না করতে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি তাকে ফোন করে জানান, শিশুটির চিকিৎসার ভার নিতে নিতে চান। তারা সম্মতি দেয়ার পর শিশুটিকে নিয়ে আসার জন্য বিকাল পাঁচটার দিকে হেলিকপ্টার পাঠান তিনি।
ফরিদপুর স্টেডিয়ামে শিশুটিকে উড়োযানে তুলে দেয়ার সময় শত শত মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়। তারা সবাই শিশুটির জন্য সৃষ্টি কর্তার কাজে প্রার্থনা করেন। নবজাতকের সাথে তার বাবা নাজমুল হুদা মিঠু ও পরিবারের অন্য স্বজনরাও ঢাকায় এসেছেন।
এর আগে শনিবার সকাল ১০টার দিকে জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া হাসপাতালে গিয়ে নবজাতকের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন
জেলার ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে জন্মের পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছিেেলন। পরে রাতে দাফন করতে নিয়ে যাওয়ার সময় কবরস্থানের মাওলানা সকালে আসতে তার স্বজনদের পরামর্শ দেন। রাতে তারা শিশুটিকে একটি কার্টনে করে কবরস্থানে রেখে আসেন। সকালে দাফনের সময় শিশুটি কেঁদে উঠলে তাকে সেখান থেকে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
