বাংলাদেশ ও মিয়ানমার চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় বৈঠকে প্রত্যাবাসনের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া নিয়ে একমত হতে পারেনি । দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ চেয়েছে গ্রাম বা অঞ্চলভিত্তিক প্রত্যাবাসন। আর মিয়ানমারের চাওয়া ভেরিফাই করা রোহিঙ্গাদের পাঠানো। তারা যে গ্রামের বাসিন্দাই হোক না কেন। এ নিয়ে শেষ পর্যন্ত কোনো সমাধান বা সমঝোতা হয়নি জানিয়ে ঢাকার কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ আশা করছে এ বিষয়ে চীন পর্দার আড়ালেও দূতিয়ালি করবে এবং মিয়ানমারকে গ্রামভিত্তিক প্রত্যাবাসনে রাজি করাতে সমর্থ হবে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রায় দেড়ঘণ্টাব্যাপী আকাঙ্ক্ষিত ওই বৈঠক হয়। ভার্চ্যুয়াল ওই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেয়া পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন পরে সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমার যেটা বলেছে, তাহলো যে ৪২ হাজারের তালিকা তারা যাচাই-বাছাই করেছে, তা দিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায় কি-না? জবাবে আমাকে দুই-তিনবার বলতে হয়েছে সংখ্যাটি এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়।
ত্রিদেশীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত সমূহ: প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে একমত হতে না পারলেও বৈঠকে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আলোচনা অব্যাহত থাকবে এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে আরেকটি বৈঠক হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আলোকে কীভাবে এগোতে পারি এবং নতুন কোনো ইস্যু এরমধ্যে না এনে এটিকে আরো দেরি না করার বিষয়ে সবাই ঐকমত্য প্রকাশ করেছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হবে জানিয়ে সচিব বলেন, ওই বৈঠকের পরপরই পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আরেকটি বৈঠক হবে। আমি অন্য দুই দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং চীনেরও এই বৈঠক করার আগ্রহ আছে। তবে এটি ভার্চ্যুয়ালি হতে পারে। বৈঠকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা নিয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, বাংলাদেশ চায় চীন ছাড়াও ভারত, জাপান, আসিয়ান জোট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের সম্পৃক্ততা। বিষয়টি চীন কীভাবে নেয় তা নিয়ে ঢাকার অবস্থান হচ্ছে বেইজিংকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়ায় চীন যাতে ‘বিব্রত’ না হয় সে বিষয়টি খেয়াল রাখছে বাংলাদেশ।
