ঝগড়ায় নাক গলানোর মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাহাদাত হোসেন মৃধা (২২) নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে খুন করেছে আরেক যুবক নগরীর বায়েজিদে । এ ঘটনার ছয় ঘণ্টার মাথায় খুনি ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন মা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বায়েজিদ থানাধীন হিলভিউ আবাসিক এলাকার এক নম্বর গলিতে এ খুনের ঘটনাটি ঘটে।
নিহত যুবক শাহাদাত বায়েজিদ ব্যাংক কলোনির বাসিন্দা আব্দুল হামিদের ছেলে। তার গ্রামের বাড়ি ঢাকায়। তিনি এক বন কর্মকর্তার গাড়ির ব্যক্তিগত চালক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। অন্যদিকে ঘাতক ফরহাদুর রহমানের মা ফাতেমা রহমান ময়না পশ্চিম ষোলষহর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে বায়েজিদ থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) আতাউর রহমান খন্দকার গতকাল আজাদীকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী ফরহাদ ছুরি মেরেছিল শাহাদাতকে। রক্তাক্ত অবস্থায় পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান ওসি। এছাড়া অভিযুক্ত ফরহাদকে কর্ণফুলী থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। শাহাদাতের ছোট ভাই অপু গতকাল বলেন, হিলভিউ আবাসিক এলাকায় তাদের পরিবারের একটি লেপ-তোশকের দোকান রয়েছে। সেখানে আরও ৬/৭টি দোকানও রয়েছে।

নিজেদের ওই দোকানটির ১শ’ গজ দূরে তার ভাইয়ের ওপর এই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে বলে জানায় অপু।
অপু স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আজাদীকে জানায়, দুপুরে ফরহাদ নামে এক যুবক একটি
দোকানে গিয়ে ভাঙচুর করছিল। এ সময় সে দোকানের মধ্যে থাকা একটি টিভিতে লাঠি
মারছিল। ওই পথ ধরে তখন আমার ভাই হেঁটে যাচ্ছিল। এ ঘটনাটি দেখে সে প্রতিবাদ
করেছিল।
এ সময় সে শাহাদাতকে চট্টগ্রামের ভাষায় গালিগালাজ করেছিল, তুমি কেন এখানে
নাক গলাতে এসেছো। দু’জনের মধ্যে তখন ঝগড়াও হয়েছিল। এক পর্যায়ে ফরহাদ সেখান
থেকে চলে গিয়ে আবার ঘুরে ঘটনাস্থলে এসে পেছন থেকে ভাইকে ছুরিকাঘাত করে
পালিয়ে যায়।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শীলব্রত বড়ুয়া
জানান, দুপুরে রক্তাক্ত অবস্থায় শাহাদাতকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ
হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শাহাদাতের গায়ে
কয়েকটি ছুরিকাঘাতের দাগ রয়েছে।
এদিকে খুনের ঘটনার পর কর্ণফুলী থানা এলাকার চরপাথরঘাটায় ফুফুর বাড়িতে গিয়ে
আশ্রয় নিয়েছিল ফরহাদ। সেখান থেকে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে থাকে ফরহাদ।
এক পর্যায়ে তার মা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফরহাদের মা ফাতেমা রহমান ময়না সাংবাদিকদের জানান, আমি
একজন দায়িত্ববান নাগরিক। আমার ছেলে খুন করেছে জেনে, বিবেকের তাড়নায় আমি
তাকে ধরে আইনের হাতে তুলে দিয়েছি। বাকিটা আইন দেখবে।
