শিক্ষার্থীদের দমানো যায়নি নিরাপদ সড়কের দাবিতে টানা চার দিন শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েও। সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি ঘোষণা করা হলেও নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্ররা সড়কে বিক্ষোভ করে।

আজ বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজের ইউনিফর্ম পড়ে ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে নগরীর ষোলশহর ২নম্বর গেইট, জিইসি মোড়, গরিবুল্লাহ শাহ মাজার, ওয়াসা, লালখান বাজার, আগ্রাবাদ বাদামতলী এলাকায় কয়েক হাজার ছাত্র মিছিল করে রাস্তায় নেমে আসে। সকাল থেকে তারা পরিবহনের চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করতে থাকে। ফলে বেলা ১২টার দিকে সিডিএ এভিনিউ দিয়ে মূল সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

এ অবস্থায় সড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। গন্তব্যে পৌঁছাতে গাড়ি না পাওয়ার পাশাপাশি বেশি ভাড়াও গুণতে হয়েছে যাত্রীদের। তারপরও শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে তাদের অসন্তুষ্ট হতে দেখা যায়নি।

 পুলিশকে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়। তাদের আশেপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তাদের নিস্ক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। এর মধ্যে ইটের আঘাতে এক পুলিশ সদস্য আহত হয় ওয়াসা মোড় এলাকায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ওয়াসার মোড় এলাকায় একটি বাস ভাংচুর করে।

এরপর সেখান দিয়ে চলাচলকারী একটি পুলিশ ভ্যানকে থামানোর চেষ্টা করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। থামাতে না পেরে গাড়িটি লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়লে ভ্যানের চালক পুলিশ সদস্য আহত হয়।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফ বলেন, ‘ঢিলের আঘাতে এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

বুধবার বিকেল থেকেই ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বাইরেও অন্য লোকজনদের বিক্ষোভে ওয়াসার মোড় ও দুই নম্বর গেট এলাকায় জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছিল।

আন্দোলনরত একজন ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের দাবি নিরাপদ সড়ক। আর কোনো মায়ের বুক খালি হোক তা আমরা চাই না। যদি চালকের লাইসেন্স না থাকে, গাড়ির ডকুমেন্ট ঠিক না থাকে, ফিটনেস না থাকে তবে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।’

তিনি জানান, বুধবারের বিক্ষোভে স্কুলের শিক্ষার্থী বেশি থাকলেও বৃহস্পতিবার কলেজের শিক্ষার্থীরাই অংশ নিয়েছে বেশি। নগরীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা আছেন এ আন্দোলনে।

আরেকজন ছাত্র বলেন, ‘ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার কিন্তু আমরা তো জানি না। সকালে স্কুলে এসে দেখলাম বন্ধ। এটা কেমন কথা। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে এসএমএস দিতে পারতো।

অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ সরকারের নির্দেশ অমান্য করে ক্লাশ চালালেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপস্থিতির খাতায় স্বাক্ষর করতে দেয়নি।

এদিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর সামনে এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের পটিয়ায় কয়েকটি স্থানে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের অবস্থান নেয়ার খবর পাওয়া গেছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031