আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো দরকার নেই বলে মন্তব্য করেন । তিনি বলেন, সংলাপ কেন? দরকার তো নেই। আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে আহ্বান করলেও তারা নির্বাচনে আসবে, না করলেও আসবে। নির্বাচনে তারা আসবেই। তাদের নেতারাই বলেছে তারা নির্বাচনে আসবেন। কাজেই এখানে আহ্বানের তো কোনো প্রয়োজন নেই।
শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে গতকাল রাজধানীর জিরো পয়েন্টে নূর হোসেন চত্বরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, আমরা চাই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক একটি নির্বাচন হোক। বিএনপি একটা বড় দল। তারা অংশ নিলে নির্বাচনটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। সেজন্য আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। তত্ত্বাবধায়ক তো পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ বোঝে না- একথা কি শেখ হাসিনার? একথা খালেদা জিয়ার। এখন কখনও সহায়ক, কখনও তত্ত্বাবধায়ক, আসলে তারা কী চায় সেটাই আমরা জানতে চাই। বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়ে তাদের প্রতি সরকার নমনীয় হচ্ছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা কোনো নমনীয়তার ব্যাপার না। ব্যাপার হচ্ছে, বিএনপি সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে। অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে কোনো বাধা তো কখনও ছিল না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, অনুমতি নিয়ে এখন পর্যন্ত তাদের এমন একটি জনসভাও হয়নি যেখানে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। বিএনপির সমাবেশে বিশৃঙ্খলার প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, এই বিশৃঙ্খলাগুলো ভয় পাই বলেই আমরা বিষয়টা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম। আমরা সব সময় অনুমতি দিতে চাই। তারা একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, তাদের অবশ্যই সভা সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার কতটা গণতান্ত্রিক এই অনুমতি দিয়ে আবারও তা প্রমাণিত হলো। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেয়ার ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি আসেনি বলে গণতন্ত্রের কী দোষ? তারা নির্বাচন বয়কট করলো। এরপর ‘গণতন্ত্র নেই’ বলে তারা সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। তাদের মনে রাখা উচিত, গণতন্ত্র না থাকলে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের কনফারেন্স (সিপিসি) বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতো না। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে আইপিইউ এবং সিপিসি সম্মেলন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে এটিই প্রমাণিত হলো যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে। আছে বলেই বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ বাংলাদেশকেই সম্মেলনের লোকেশন হিসেবে ঠিক করেছে। শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নূর হোসেনের রক্ত গণতন্ত্রের বন্ধু। রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে দেশমাতৃকার ঋণ শোধ করেছেন তিনি। নূর হোসেনের স্বপ্নে গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছে। এখন আমাদের অঙ্গীকার হবে বহু রক্তমূল্যে অর্জিত এই গণতন্ত্রকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবো। এটাই আজকের দিনের অঙ্গীকার। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।